পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর তৃণমূলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা দখলের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। কিন্তু ‘রাজ্য দখলের’ সেই আশা হয়তো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে যাচ্ছে। কেননা, ত্রিপুরার ৬০ আসনের বিধানসভার ভোটে তৃণমূল মাত্র ২২টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। এর মধ্যে তৃণমূলের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সাবেক সভাপতিও দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আশাভঙ্গের এসব ঘটনার মধ্যে তৃণমূলের প্রধান মমতা আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি আশার সঞ্চার করতে ত্রিপুরা যাচ্ছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মতো ভারতের আরেকটি বাঙালি–অধ্যুষিত রাজ্য ত্রিপুরা। এ রাজ্যের শাসনক্ষমতায় এখন বিজেপি। ২০১৮ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিপুল ভোটে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে। মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির তরুণ নেতা বিপ্লব দেব। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পর নানা ঘটনায় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন বিপ্লব দেব। এরপর তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্যসভার সংসদ সদস্য করা হয় বিপ্লব দেবকে।
অন্যদিকে, ২০২১ সালের নির্বাচনে রাজ্যে বিপুল বিজয়ের পর অন্য রাজ্যে শক্তি বৃদ্ধির তৎপরতা শুরু করে তৃণমূল। ত্রিপুরা দখলের জন্য সেখানে প্রচারে পাঠান দলের মহাসচিব সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দলের বেশ কিছু নেতাকে। মমতা ত্রিপুরা দেখভালের জন্য পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ত্রিপুরার রাজ্য বিধানসভার ৬০ আসনে নির্বাচন হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি আর ফলাফল ঘোষণা হবে আগামী ২ মার্চ।
ইতিমধ্যে বিজেপি, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করলেও তৃণমূল পারেনি। বামফ্রন্ট অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাত করে আসন ভাগাভাগি করে নেয়।
জোট গড়ার জন্য কোনো শরিক না পাওয়ায় গতকাল রোববার দলের ২২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে তৃণমূল।
আজ ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। তাই তৃণমূলের রাজ্য দখলের স্বপ্নের কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে। যদিও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরায় দলকে চাঙা করতে ৬ ফেব্রুয়ারি ২ দিনের সফরে রাজধানী আগরতলায় যাচ্ছেন। ৬ তারিখ তিনি ত্রিপুশ্বেরী মন্দিরে পূজা দেবেন। ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি তৃণমূলের ডাকা আগরতলার এক রোড শোতে অংশ নেবেন।
ত্রিপুরায় এই ডামাডোলের মধ্যে গত শুক্রবার তৃণমূলের সাবেক রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিক যোগ দেন বিজেপিতে। নির্বাচনের আগে একটা বড় ধাক্কা খেল তৃণমূল।
ত্রিপুরা বিধানসভার ৬০ আসনের মধ্যে বিজেপির আসন রয়েছে ৩৬টি। বামফ্রন্টের রয়েছে ১৬ এবং আঞ্চলিক দল আইপিএফটির রয়েছে ৮টি আসন।