কৃষক আন্দোলনে আবার উত্তাল হতে চলেছে ভারতের পাঞ্জাব–হরিয়ানা। উৎপাদিত ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি স্বীকৃতি, কৃষিঋণ মওকুফ, বিদ্যুতের বিল না বাড়ানো ও গত আন্দোলনে কৃষকদের বিরুদ্ধে আনা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লি চলো পদযাত্রা শুরু করেছেন কৃষকেরা। তাঁদের অভিযান রুখতে আজ শুক্রবার পাঞ্জাব–হরিয়ানার শম্ভু সীমান্তে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হলো।
কৃষকদের দিল্লি চলো কর্মসূচি ঠেকাতে জাতীয় সড়কে কাঁটাতার দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। তবু আগুয়ান কৃষকদের আটকাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এই কারণে শুক্রবার প্রায় অচল থাকে।
কৃষকেরা যাতে দিল্লি আসতে না পারেন, সে জন্য দিল্লি পুলিশ সীমান্তঘেঁষা বিভিন্ন প্রবেশপথে ব্যাপক তল্লাশির বন্দোবস্ত করেছে। দিল্লি পুলিশ ঠিক করেছে, কৃষকদের মিছিলকে দিল্লি ঢুকতে দেওয়া হবে না। সরকারকে স্মারকলিপি দিতে চাইলে পুলিশ কৃষক নেতাদের উপযুক্ত পাহারায় দিল্লি নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করতে পারে।
তিন দিন আগে কৃষকনেতারা পার্লামেন্ট অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন। উত্তর প্রদেশের কৃষকদের আটকে দেওয়া হয়েছিল দিল্লির সীমান্তে। গতকাল বৃহস্পতিবার কৃষকনেতারা জানিয়েছিলেন, আজ শুক্রবার তাঁরা নতুন করে অভিযান শুরু করবেন। তা ঠেকাতে পাঞ্জাব, হরিয়ানার কোনো কোনো জেলা ও স্পর্শকাতর এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ব্যবস্থা জারি থাকবে বলে বিজেপিশাসিত হরিয়ানা প্রশাসন জানিয়েছে।
কৃষক আন্দোলনের জেরে কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০–২১ সালে তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও কৃষকদের আন্দোলন স্তিমিত হয়নি। তাঁরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা চান। কেন্দ্রীয় সরকার তা দিতে নারাজ। যদিও আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় জানান, মোদি সরকার উৎপাদিত সব ফসল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কিনে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে সরকার যেকোনো সময়ে কথা বলতে প্রস্তুত।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় কৃষিমন্ত্রী চৌহানকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কৃষকদের দাবিদাওয়া এখনো কেন পূরণ করা হয়নি। সরকার কৃষকদের কী কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কতটা পূরণ হয়েছে, কী কী বাকি আছে, সেসব নিয়েও তিনি প্রশ্ন করেছিলেন।