এনসিপির নেতা বাবা সিদ্দিক
এনসিপির নেতা বাবা সিদ্দিক

বাবা সিদ্দিককে গুলির পর ধারণ করা নতুন ভিডিওতে দেখা যায় আহত আরেক ব্যক্তিকে

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিককে ১২ অক্টোবর তাঁর ছেলের মুম্বাইয়ের কার্যালয়ের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে নতুন একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বাবা সিদ্দিক ও রাজ কানোজিয়া নামের এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন বন্দুকধারীরা। রাজ কানোজিয়ার সঙ্গে বাবা সিদ্দিকের কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল না।

গুলির ঘটনার পর ধারণ করা নতুন একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি মেঝেতে শুয়ে আছেন। বাঁ পায়ে আঘাত পেয়েছেন তিনি। রক্ত বন্ধ করার জন্য তাঁর পায়ে এক টুকরা কাপড় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময় এক ব্যক্তিকে ‘গুলি হয়েছে...গুলি’ বলে চিৎকার করতে শোনা যায়। এ সময় পুলিশ ওই ব্যক্তিকে ঘিরে থাকা মানুষদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বন্দুকধারীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বাবা সিদ্দিক ও তাঁর ছেলে জিশানকে হত্যার জন্য তাঁদের ভাড়া করা হয়েছিল।

বাবা সিদ্দিকের জন্য তিনজন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োজিত ছিলেন। তাঁরা তিন ধাপে কাজ করতেন। গুলি চলার সময় একজন কনস্টেবল বাবা সিদ্দিকের সঙ্গে ছিলেন।

উত্তর প্রদেশের তিন বন্দুকধারী গুরমেল বালজিৎ সিং, ধর্মরাজ কাশ্যপ ও শিবকুমার গৌতম গুলি করে হত্যা করেন বাবা সিদ্দিককে। পরিকল্পনা ছিল, বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রায় ভিড়ের মধ্যে লুকিয়ে থেকে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা বাবা সিদ্দিককে গুলি করবেন গুরমেল ও ধর্মরাজ। তবে বাবা সিদ্দিকের আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা ও জনগণের ভিড় দেখে শিবকুমার তাঁদের বলেন, তিনিই প্রথম গুলি ছুড়বেন।

বাবা সিদ্দিককে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি ছোড়েন শিবকুমার। তাঁরা পুলিশ কনস্টেবলের চোখে মরিচের গুঁড়া ছুড়ে দেন। এরপর শিবকুমার ভিড়ের মধ্যে মিশে পালিয়ে যান। তবে গুরমেল ও ধর্মরাজ ধরা পড়েন। তাঁদের কাছ থেকে ২টি পিস্তল ও ২৮টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে, গ্রেপ্তার বন্দুকধারীরা পুলিশকে বলেছেন, তাঁদের তিনজনের নেতৃত্বে ছিলেন শিবকুমার। জিজ্ঞাসাবাদের সময়, তাঁরা নিজেদের নির্দোষ দাবি বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী কে, তা শুধু শিবকুমারই জানেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের জন্য কাজ করতেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। গুজরাটের শবরমতি জেলে বন্দী বিষ্ণোই বলিউড অভিনেতা সালমান খানের মুম্বাইয়ের বাড়ির বাইরে গুলির ঘটনায়ও জড়িত ছিলেন। বাবা সিদ্দিকের সঙ্গে সালমান খানের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব থাকার কথা শোনা যায়।

বাসভবন ও কার্যালয়ে বাবা সিদ্দিকের গতিবিধির ওপরও কয়েক মাস ধরে নজর রাখছিলেন হামলাকারীরা। হামলার জন্য প্রত্যেককে অগ্রিম ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের মাত্র কয়েক দিন আগে অস্ত্রগুলো তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

বাবা সিদ্দিককে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিবকুমারকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে।