তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্র
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্র

ব্যবসায়ীর টাকা নিয়ে প্রশ্ন

ভারতের লোকসভা থেকে মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার

তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্রর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন—বিজেপির এ অভিযোগ তদন্ত করে ‘এথিকস কমিটি’ মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার বহিষ্কার করা হলো তাঁকে।

আজ লোকসভায় ব্যাপক আলোচনা ও কণ্ঠভোটের পর স্পিকার ওম বিরলা বলেন, ‘মহুয়া মৈত্র অসৎ ও অনৈতিক কাজ করেছেন বলে (এথিকস) কমিটি যে সুপারিশ করেছে, তা গ্রহণ করছে সংসদ। অতএব একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সরকারের সমালোচনা করে লোকসভায় প্রশ্ন করার বদলে শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে নগদ দুই কোটি রুপি এবং দামি উপহারসামগ্রী নিয়েছেন। তবে শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন মহুয়া মৈত্র ও তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস।

সংসদ সদস্যপদ খারিজ হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় লোকসভার বাইরে সাংবাদিকদের মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘এথিকস কমিটি সব নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। আমাকে হেনস্তা করার জন্য আগামীকাল দেখবেন আমার বাড়িতে সিবিআই (ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন তদন্ত সংস্থা) পাঠানো হবে।’    

উল্লেখ্য, মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যে একটি তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।

মহুয়া মৈত্রর সংসদ সদস্যপদ খারিজ হওয়াটা অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে এর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বিজেপির এ ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতি গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এই লড়াইয়ে মহুয়া জয়ী হবেন। জনগণই এর বিচার করবেন। আগামী (লোকসভা) নির্বাচনে তারা (বিজেপি) পরাজিত হবে।’

কয়েক মাস যাবৎ আদানি শিল্পগোষ্ঠীর ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে লোকসভায় মহুয়া বেশ কিছু প্রশ্ন করছিলেন। এর মধ্যে অক্টোবরে ঝাড়খন্ডের গোড্ডা (ওখানে আদানির প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি হয়) কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিজেপির নিশিকান্ত দুবে মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘অনৈতিকতার’ অভিযোগ আনেন। তাঁর অভিযোগ, শিল্পপতি হিরানন্দানির কাছ থেকে নানাবিধ ‘সুবিধা’ নিয়ে তাঁর ব্যবসায়িক স্বার্থে মহুয়া প্রশ্নই শুধু করেননি, ই-মেইলের লগইন পাসওয়ার্ড পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীকে দিয়েছিলেন, যাতে তিনি সরাসরি প্রশ্ন পাঠাতে পারেন যেটা ‘দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’।