আর কেউ প্রতারণা ও জালিয়াতি ঘটনার জেরে ‘ফোর টোয়েন্টি’ বা ‘৪২০’ বলতে পারবে না। গতকাল সোমবার বিদায় হয়ে গেল ভারতের দণ্ডবিধির এই ধারা। ফলে ব্রিটিশ যুগের ভারতের দণ্ডবিধি আইন বদলে গেল। জালিয়াতি বা প্রতারণার দণ্ড থাকলেও সেই দণ্ড আর দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় নেই। সেই ধারা বদলে গেছে নতুন করে কার্যকর হওয়া ভারতের ‘ন্যায় সংহিতা’ আইনে।
গতকাল ভারতে দণ্ডবিধি আইনকে আমূল পরিবর্তন করে চালু করা হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বা বিএনএস। এই বিএনএস অনুযায়ী প্রতারণা ও জালিয়াতির ধারা বদলে হয়েছে ৩১৮ (৪) ধারা। আবার গৃহবধূ নির্যাতনের ধারা ছিল দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ। নতুন কার্যকর হওয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় সেই ধারা বদলে হয়েছে ৮৫। এ ছাড়া কিছু দণ্ডের ধারা বদলে গেছে ন্যায় সংহিতায়।
১৮৬০ সালে তৈরি হয় ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি)।
গতকাল ভারতে কার্যকর হয়েছে এই ন্যায় সংহিতা। তবে ৩০ জুন রাত ১২টার আগে সংগঠিত অপরাধের বিচার হবে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুয়ায়ী, আর রাত ১২টা পর সংগঠিত অপরাধের জন্য এই আইন কার্যকর হবে নতুন ন্যায় সংহিতার ধারা অনুযায়ী।
যদিও এই আইনের বদলকে একদল আইনজীবীও মেনে নেয়নি। আলিপুর, কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্ট ও শিয়ালদহের আদালতে আইনজীবীদের একাংশ এই আইনের প্রতিবাদ করে কালো ব্যাজ পরলেও আবার অনেকেই মামলায় শামিল হয়েছেন। তবে গতকাল বামফ্রন্ট, এসইউসিআইর ছাত্র সংগঠন ডিএসও, মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর, সিপিআই (এমএল) এবং নতুনকরে কলকাতায় গড়া ‘সংগঠন বাঁচাও সমিতি’ কলকাতায় এই আইনের প্রতিবাদে সভা সমাবেশ করেছে।
এদিকে এই আইন বলবৎ হওয়ার পর গতকাল কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজারে একটি ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তাসহ আইনজীবীরা অংশ নেন। এখানেই এই আইন নিয়ে আলোচনা হয়। জানানো হয় এই আইন কার্যকর হওয়ার পর প্রথম দিনেই কলকাতা পৌর এলাকায় দুই শতাধিক মামলা হয়েছে।
আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, এই আইন কার্যকর হওয়ায় অনেক আইনজীবী ও মক্কেল সমস্যায় পড়বেন। অনেকে আবার বলছেন, এই আইনে সংশোধন এনে বহু আইনকে আরও কড়া করা হয়েছে। দণ্ডের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। গণপিটুনির মতো অপরাধের শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।