ভারতের মুম্বাইয়ে ২০০৮ সালে সন্ত্রাসী হামলায় সাজাপ্রাপ্ত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান ব্যবসায়ী তাহাউর হোসাইন রানাকে ভারতের কাছে হস্তান্তরের পক্ষে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি আপিল আদালত এ রায় দেন। রানা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি কারাগারে আটক রয়েছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার ওই আপিল আদালতের রায়ে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় রানাকে ফেরত পাঠানো যায়।’
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আগেই অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ীকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিস্ট্রিক্ট আদালতে যান রানা। আদালত সেই আবেদন নাকচ করে দেন। এবার ক্যালিফোর্নিয়ার নবম সার্কিটের আপিল আদালত ডিস্ট্রিক্ট আদালতের রায়কে যথার্থ বলে রায় দিয়েছেন।
আদালত আরও বলেছেন, রানার বিরুদ্ধে আনা যে অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রায় দিয়েছেন, তার পক্ষে ভারত পর্যাপ্ত উপযুক্ত সাক্ষ্য–প্রমাণ সরবরাহ করেছে।
সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মুম্বাই পুলিশের দেওয়া ৪০৫ পাতার অভিযোগপত্রে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান ব্যবসায়ী রানার নামও ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে লস্কর-ই-তাইয়েবার হয়ে কাজ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
পাকিস্তানি-আমেরিকান ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে রানার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। হেডলিকে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বরের মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী মনে করা হয়। হামলার আগে ঘটনাস্থল রেকি করে যান হেডলি।
অবশ্য আপিল আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করতে পারবেন ৬৩ বছর বয়সী রানা। তাঁর আইনজীবীদের হাতে এখনো নানা বিকল্প আছে। তাঁরা রানাকে ভারতে পাঠানো ঠেকাতে চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০০৮ সালের মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলায় ছয় মার্কিন নাগরিকসহ মোট ১৬৬ জন নিহত হন। মুম্বাইয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছিল। তখন মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে ১০ পাকিস্তানি সন্ত্রাসী ৬০ ঘণ্টার বেশি সময় অবরোধ করে রেখেছিল।
মুম্বাই হামলার এক বছরের কম সময়ের মধ্যে শিকাগো থেকে রানাকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। রানার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়।
ডেনমার্কে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় সহায়তার ষড়যন্ত্র এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংস্থা লস্কর ই-তাইয়েবাতে প্রয়োজনীয় সহায়তার করার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট আদালত রানাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেন।
সে্ই সাজা খাটার পর কারামুক্ত হওয়ার ঠিক আগে রানাকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানায় ভারত।