ভারতের একটি কোম্পানির তৈরি ‘ভেজাল’ কাশির সিরাপ নিয়ে আবারও বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এবার ইরাকে রপ্তানি করা কাশির সিরাপে মাত্রাতিরিক্ত টক্সিন পাওয়ায় এই সতর্কতা জারি করা হলো৷
গত ১০ মাসে ভারতে তৈরি কাশির সিরাপের ওপর এটি পঞ্চম ‘নিষেধাজ্ঞা’৷ ২০২২ সালে গাম্বিয়া ও উজবেকিস্তানে অন্তত ৮৯ শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয় ভারতের মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি কফ সিরাপকে৷ এরপর ডব্লিউএইচওর সতর্কতার মুখে কাশির সিরাপ রপ্তানির বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সতর্ক হলেও ওষুধের বাজারে ভারতের কিছু কোম্পানির দুর্নাম কাটেনি৷
রিমান ল্যাবস নামের আরেকটি ভারতীয় কোম্পানির নাম জড়ায় ক্যামেরুনের শিশুমৃত্যুর ঘটনায়। ক্যামেরুন সরকারের অভিযোগ ও ডব্লিউএইচওর সতর্কবার্তার জেরে কাশির সিরাপটি পরীক্ষা করে দেখে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ৷ সিরাপে সত্যি সত্যি অতিরিক্ত টক্সিন পেয়ে কাশির সিরাপ রপ্তানির আগে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
এরপরেও গত মার্চে উজবেকিস্তানে আবারও একই অভিযোগ ওঠে৷ দেশটিতে ১৮ শিশুর মৃত্যুর জন্য মারিয়ন বায়োটেক কোম্পানির কাশির সিরাপকে দায়ী করা হয়। শিশুমৃত্যুর জেরে কোম্পানিটির লাইসেন্স বাতিল করে ওই কোম্পানির কয়েকজন কর্মীকে কারাগারেও পাঠানো হয়৷
এরপরও ডব্লিউএইচওর পঞ্চম সতর্কবার্তা থামানো যায়নি৷ সেবন করলে ‘মারাত্মকভাবে আহত হওয়া বা মৃত্যুর’ ঝুঁকি রয়েছে জানিয়ে ভারতে তৈরি কাশির সিরাপের বিষয়ে তাই আবার সতর্ক করেছে জাতিসংঘের এই স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা৷
গত সোমবার জারি করা এই সতর্কতা ‘কোল্ড আউট’ নামের একটি কাশির সিরাপের কারণে। ফৌর্টস ল্যাবরেটরিজকে দিয়ে সিরাপটি তৈরি করিয়েছিল ভারতের আরেক কোম্পানি ড্যাবিলাইফ ফার্মা৷
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ইরাকে রপ্তানি করা এই ওষুধে ০ দশমিক ২৫ শতাংশ ডায়েথিলিন এবং ২ দশমিক ১ শতাংশ ইথাইলিন পাওয়া গেছে৷ এ দুটি উপাদান সর্বোচ্চ ০ দশমিক ১০ শতাংশ থাকলে তা সহনীয় মাত্রায় আছে বলে ধরে নেওয়া হয়৷ দুটি উপাদানই অনেক বেশি থাকায় ‘কোল্ড আউট’ সেবনে ‘তলপেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, প্রস্রাবে অসুবিধা, মাথাব্যথা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, এমনকি কিডনির বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে এবং এ কারণে মৃত্যুও হতে পারে’ জানিয়ে ওষুধ সেবনের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছে৷