হাতির শাবক মরলে মাটিচাপা দেওয়া হয়, এটাই হচ্ছে বিস্ময়কর
হাতির শাবক মরলে মাটিচাপা দেওয়া হয়, এটাই হচ্ছে বিস্ময়কর

বিচিত্র

হস্তীশাবক মরলে যেভাবে সৎকার করে বড় হাতিরা

শাবকের মৃত্যুতে অনেকটা মানুষের মতো আচরণ করে এশীয় প্রজাতির হাতি। হাতিগুলো এদের শাবকের মৃত্যুতে শোকাহত হয়। চিৎকার করে শোক প্রকাশ করে। এমনকি শাবকের মরদেহ মাটিচাপা দেয়। সম্প্রতি প্রকাশিত ভারতের একটি গবেষণায় এমনটাই বলা হয়েছে।

থ্রেটেন্ড টাক্সা নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ ও ২০২৩ সালের মধ্যে গবেষকেরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে হাতিগুলোর পাঁচটি মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে, এমন জায়গার সন্ধান পেয়েছেন।

গবেষকেরা বলছেন, বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, হাতির শাবককে মাটিচাপা দেওয়ার আগে শুঁড় আর পা দিয়ে মরদেহ বেশ দূরে টেনে নেওয়া হয়েছে। পরে পা ওপরের দিকে দিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়, ‘হাতিগুলো যত্নশীল এবং সামাজিক প্রাণী। হাতির শাবকের মৃতদেহের পরীক্ষা শেষে আমাদের মনে হয়েছে, হাতির পালের একাধিক সদস্য একটি বা একাধিক পা ধরে তাদের মাটির গর্তে সযত্নে রেখেছে।’

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, হাতিরা মানববসতি থেকে কয়েক শ মিটার দূরে চা-বাগানের খালে তাদের শাবকদের মৃতদেহ সমাহিত করেছে।

বিজ্ঞানীরা এমন উদাহরণও পেয়েছেন যে মৃত শাবকের জন্য বড় হাতিগুলো বিলাপ করে। মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়ার স্থানে তারা জোরে জোরে চিৎকার করে, শুঁড়ে আওয়াজ তোলে।

গবেষণায় বলা হয়, হাতির পাল ৩০ থেকে ৪০ মিনিট জোরে জোরে আওয়াজ করতে থাকে। চা-বাগানের অনেক নিরাপত্তারক্ষী তাদের আওয়াজ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, কেবল শাবক হাতির মরদেহ মাটিচাপা দেওয়ার জন্য বহন করে নিয়ে যাওয়া হয়। বড় হাতিগুলো অনেক ভারী বলে তাদের ক্ষেত্রে এমনটা হয় না।

শাবকের মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়ার স্থানে ১৫-২০টি হাতির পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। এতে মনে হচ্ছে, হাতির পাল মিলে শাবকের মৃতদেহ মাটিচাপা দিয়েছে।