ভারতীয় সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা কলকাতার দ্য টেলিগ্রাফ, বিজনেস ওয়ার্ল্ড, ইন্ডিয়া টুডেসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। তিনি চার দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করছেন। তাঁর লেখালেখির জগৎ রাজনৈতিক অর্থনীতি। এতে উঠে এসেছে আদানি গ্রুপসহ বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নানা ‘অনিয়ম ও অনাচারের’ চিত্র। সম্প্রতি শেয়ার নিয়ে বহুজাতিক কোম্পানি আদানি গ্রুপের কারসাজির তথ্য সামনে এনেছে মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চ। ওই প্রতিবেদনে সাংবাদিক পরঞ্জয় ও তাঁর লেখার বিভিন্ন তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, এমন কিছু বলা বা লেখা থেকে বিরত থাকতে আহমেদাবাদের আদালত নির্দেশ জারির পর প্রায় আড়াই বছর তিনি চুপ ছিলেন। হিনডেনবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তিনি আবার মুখ খুললেন। এবার তিনি কথা বলেছেন প্রথম আলোর নয়াদিল্লি প্রতিনিধি সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। দুই পর্বে তাঁর সাক্ষাৎকারের প্রথম কিস্তি আজ ছাপা হলো।
মসির জোর এখনো শেষ হয়নি, এটা ভাবতে ভালো লাগছে। আরও ভালো লাগছে এটা দেখে, বাক্রুদ্ধ করে রাখা হলেও ছয়–সাত বছর ধরে যা বলে আসছেন, তা আজ আন্তর্জাতিক মান্যতা পেল। আজ তাই আপনি খবরের শিরোনামে।
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: অবশ্যই আমি প্রসন্ন। তৃপ্ত। ছয় বছর ধরে যা বলে আসছি, আজ গোটা পৃথিবী তা নিয়ে চর্চা করছে। সত্যি বলতে কী, এটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। সে কারণে আনন্দিত। গর্বিতও কিছুটা, সাংবাদিকের ধর্ম পালন করতে পেরেছি ভেবে।
গত এক পক্ষকাল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে যাঁর অবস্থান, তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আদানির উল্কাসম উত্থানের নেপথ্য কারিগর হিসেবে তিনিই চিহ্নিত। তাই আলোচিতও। সংসদের বিরোধীদের সরাসরি আক্রমণের লক্ষ্যও তিনি। অথচ লোকসভা বা রাজ্যসভা—কোথাও তিনি তাঁর ভাষণে আদানির নাম পর্যন্ত উচ্চারণ করলেন না!
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: ঠিকই বলেছেন। রাহুল গান্ধী, মহুয়া মৈত্র, অধীর চৌধুরী, মল্লিকার্জুন খাড়গে থেকে শুরু করে অনেক বিরোধী সংসদ সদস্য সরাসরি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের অন্ধ আনুকূল্য পেয়েই আদানি এই জায়গায় পৌঁছেছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী নীরব থাকলেন। একটিবারের জন্যও আদানির নাম উচ্চারণ করলেন না। শুধু তা–ই নয়, রাহুলের ভাষণ থেকে ১৮টি অংশ বাদ দেওয়া হলো! এটা ওঁরা
ভুল করলেন। আমি মনে করি, বিবিসির তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করে যে ভুল এই সরকার করেছে, সংসদে আদানি প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর নীরব থাকা, বিরোধীদের বক্তব্য বাদ দেওয়াও তেমন বোকামি। লোকে তো সব শুনেছে। ইউটিউবেও শুনতে পারে। আজকের দুনিয়ায় এভাবে জবরদস্তি কিছু করা বুঝিয়ে দেয় নিশ্চিতই কিছু লুকানো হচ্ছে। চাপা দেওয়া হচ্ছে।
মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে অভিযোগ তো মারাত্মক? অথচ সরকারের কোনো মহল থেকে কোনো উচ্চবাচ্য নেই!
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: নেই তো! গত দুই সপ্তাহ ধরে যা যা ঘটেছে, তা সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। আমিও অবাক। ব্যবসায়ী গৌতম আদানির নাম ১৫–২০ বছর আগে সেভাবে কেউ জানতই না। সেই মানুষটি কয়েক বছরের মধ্যে কী করে পৃথিবীর দ্বিতীয় ধনকুবের হয়ে গেলেন, মানুষ তা জানতে চাইছিল। হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনে তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এসেছে। বিরোধীরা সেই উত্থানের পেছনে সরকারের হাত দেখছে। মহুয়া মৈত্র বলেছেন, আদানিকে নিয়ে দেড় বছর আগে তিনি শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়াকে’ (সেবি) চিঠি লিখেছিলেন। অর্থ প্রতিমন্ত্রীও সংসদে সেই প্রসঙ্গে জানিয়ে ছিলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু দেড় বছরে কী হয়েছে আমরা কেউ জানি না। উত্তর দিতে পারবে রিজার্ভ ব্যাংক, সেবি। তারা কী করেছে আমাদের জানা নেই। হিনডেনবার্গ অন্তত ৩০টি নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছে। কোথা থেকে কীভাবে টাকা এসেছে, কীভাবে অনিয়ম করা হয়েছে তারা দেখিয়েছে। কিন্তু কোনো উত্তর নেই!
প্রধানমন্ত্রী এড়িয়ে গেলেন। সরকারও নিরুত্তর। অথচ প্রধানমন্ত্রী জোরের সঙ্গে নিজেকে নিষ্কলুষ, নিষ্কলঙ্ক, নির্দোষ প্রতিপন্নের চেষ্টা করলেন। কেন? কী কারণে? আপনি তো রাজনীতি–অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন। কী মনে হয়?
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: এই প্রশ্নের জবাব আমার কাছে নেই। আমি সত্যিই জানি না। এটুকু বলতে পারি, গৌতম আদানির কাজকর্ম নিয়ে আমি অনেক কিছু লিখেছি। ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স’ (ডিআরআই) আদানিদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগের জবাব চেয়ে শোকজ নোটিশ জারি করেছিল। সেসব আমি লিখেছি। আমার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট ‘parajnoy.in’–এ ঢুকে ‘The A files’–এ গেলে বাংলাদেশের মানুষ ডিআরআইয়ের ওই সব অভিযোগ ও নোটিশের হদিস পাবেন। হিনডেনবার্গ ওখান থেকে অনেক তথ্য নিয়েছে কি না বলতে পারব না। তবে এটুকু বলতে পারি, পাঁচ বছর আগে আমি এসব বিষয় নিয়ে লিখেছিলাম।
ডিআরআইয়ের অভিযোগ কী কী ছিল?
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: অভিযোগ ছিল, তুমি বিদেশ থেকে কয়লা আনছ; বিদ্যুৎ তৈরির যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ আমদানি করছ, অথচ ঠিক দাম দেখাচ্ছ না। একটা সময় ওরা হীরা আমদানি করে কেটে পালিশ করে সোনার গয়নায় বসিয়ে তা রপ্তানি করত। সেই কাজেও বহু অনিয়ম ধরেছিল ডিআরআই। তাদের শোকজ করেছিল। কিন্তু ওই পর্যন্ত। এমন বহু অভিযোগ ভারত সরকারের সংস্থারাই করেছিল। আমি লিখেছিলাম তথ্যসহকারে।
আজ তা মান্যতা পেল। হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনে একমাত্র যে সাংবাদিককের নাম উল্লেখ রয়েছে তা আপনি। এটা যেমন সন্তুষ্টির বিষয়, তেমনই দুশ্চিন্তার বিষয় নিশ্চিতই নানান ঝঞ্ঝাট?
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: ওই লেখালেখির ফলে গুজরাট, রাজস্থান ও দিল্লির আদালতে আমার বিরুদ্ধে ছয়টি মানহানির মামলা চালানো হচ্ছে। একটি আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমি আদানির বিরুদ্ধে কিছু লিখতে বা বলতে পারব না। আড়াই বছর হয়ে গেছে সেই নিষেধাজ্ঞার বয়স।
কিন্তু আপনি তো আমাকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন!
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: হ্যাঁ, দিচ্ছি। কিন্তু আমি যা বলছি বা বলব, যে তথ্য দাখিল করছি বা করব, সব জনসমক্ষে রয়েছে। নতুন করে কিছু বলছি না। কোনো মতামতও জানাচ্ছি না। যা হয়েছে তা ভালো না মন্দ বিচার করছি না। আদানি গোষ্ঠীর হাল কাল কী হবে, সে কথাও বলছি না। যা বাস্তব ও সবার সামনে রয়েছে, সেগুলোই জানাচ্ছি। আমি ওদের নিয়ে প্রথম লিখি ২০১৫ সালে। কেন লিখলাম? কারণ, সেটাই আমার কাজ। এসব নিয়ে আমি বইও লিখেছি। একজন শিল্পপতি যাঁকে সেভাবে কেউ চিনত না, তাঁর এই উত্থান, শেয়ারের দাম, কীভাবে হলো—সেটা লেখাই তো সাংবাদিকের ধর্ম! আদানির একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রকে সরকার কীভাবে ৫০০ কোটি টাকা ফায়দা করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, সেটা নিয়ে লিখেছিলাম। বলেছিলাম, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুবিধা করে দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় আদানি। ওটাতে আরও একটা বিষয় ছিল। সরকারকে ৫০০ কোটি টাকা কর না দিয়ে আদানি তা ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা প্রায় পাকা করে ফেলেছিল। যে টাকা কেউ দেয়ইনি, সেই টাকা দাবি করাই তো যায় না? ওই প্রতিবেদন সংসদে ওঠে। আলোচনা হয়। শেষমেশ ওই ৫০০ কোটি টাকা আদানিরা পায়নি।
ওটাই কি মামলার কারণ? এবং তার জেরে ‘ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি’র সম্পাদক পদ থেকে সরে যাওয়া?
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: ঠিক তাই। একটার পর এক মামলা। আমার নামে, আমার সঙ্গী লেখকদের নামেও। কিন্তু ২০১৯ সালে মে মাসে ভোটের ফল ঘোষণার ঠিক আগে সবার সব মামলা তুলে নেওয়া হলেও আমার মামলা আজও ঝুলে রয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে করোনার সময়ে আমার নামে ‘জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা’ জারি করা হলো। আমি ঘাবড়ে গেলাম। নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকলাম দশ দিন। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের দরবারে গিয়ে বলেছিলাম, আসামি হাজির। সেই মামলা এখনো চলছে।
বাক্রুদ্ধ কোন মামলায় করা হলো? আদানির বিরুদ্ধে কিছু বলা বা লেখা যাবে না সেই হুকুম?
পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা: সেটা ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রকে নিয়ে। তাঁর অনেক রায় আদানিকে অনেকভাবে সাহায্য করেছে। অবসর নেওয়ার দিন কয়েক আগে তাঁর এক রায়ের ফলে আদানি গোষ্ঠীর ৮ হাজার কোটি টাকা লাভ হয়, যা নিয়ে বিবাদ চলছিল। আমি ও আমার সঙ্গী সাংবাদিক আবির দাশগুপ্ত তা নিয়ে তিনটি প্রতিবেদন লিখি। একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘জাস্টিস অরুণ মিশ্রজ পার্টিং “গিফট” অব রুপিজ ৮ থাউজ্যান্ড ক্রোর টু আদানি।’ আদানি মামলা ঠোকে। আহমেদাবাদে। রায়ে বলা হয়, ওই শিরোনামের মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে বিচার বিভাগের মানসম্মান নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু নিবন্ধের তথ্য বা প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে কোনো প্রশ্নই তোলা হয়নি। ওই মামলার রায়েই আমার কণ্ঠরোধ হয়ে গেল। নির্দেশ হলো আদানি সম্পর্কে কিছু লেখা বা বলা যাবে না। সেটা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস। অবসর গ্রহণের পর বিচারপতি অরুণ মিশ্র জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হন।
চার দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার জীবনে ছয়টি মামলার ভারে এখন আপনি বিপর্যস্ত। কণ্ঠরোধের আদেশও আড়াই বছর হয়ে গেল। প্রত্যাহারে উদ্যোগী হচ্ছেন না?
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: সেটা আমার আইনজীবী দেখছেন। এটুকু বলতে পারি, গৌতম আদানিকে আমি অনুরোধ করেছিলাম মামলা তুলে নিতে। উনি হ্যাঁ বা না কিছুই বলেননি। আমার প্রতিবেদন আরও অনেককে অসন্তুষ্ট করেছে। আম্বানিদের নিয়ে বই লিখেছি। গ্যাস ওয়ারস: ক্রোনি ক্যাপিটালিজম অ্যান্ড দ্য আম্বানিজ। ২০১৪ সালে প্রকাশিত। আম্বানিরা চারবার উকিলের চিঠি পাঠিয়েছিল। কিন্তু মামলা করেনি। সাহারা গোষ্ঠীর সঙ্গে আয়কর বিভাগের বিবাদ নিয়ে লিখেছিলাম। তারাও উকিলের চিঠি পাঠিয়েছিল। জবাব পাওয়ার পর আর এগোয়নি। মামলাও করেনি। টাইমস অব ইন্ডিয়া গোষ্ঠীও আমার এক প্রতিবেদন নিয়ে উকিলের চিঠি পাঠিয়েছিল। কিন্তু তারাও মামলার পথে এগোয়নি। আদানি ছাড়া আর কেউ কখনো মামলা করেনি।
প্রবল রুষ্ট শুধু আদানি। এতটাই যে একটার পর একটা মামলা। এর কারণ কি প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সাহচর্যের উদাহরণগুলো তুলে ধরা বা সে নিয়ে প্রশ্ন তোলা?
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: সে উত্তর আমার জানা নেই। আমি তথ্য সাজিয়ে দিচ্ছি। তথ্য হাজির করছি। মতামত আপনার পাঠকদের। আদালতের নির্দেশে এসব বিষয়ে আমার মত প্রকাশের উপায় নেই; যদিও সেটা আমার মৌলিক অধিকার। মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজটা চার দশকের বেশি সময় ধরে করে আসছি। অথচ আড়াই বছর ধরে যেভাবে চাই সেভাবে করতে পারছি না। বেদনার জায়গা এটাই।
চিন্তার অন্য কারণও আছে। আদানি গোষ্ঠী শুধু ভারতেই নয়, বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বন্ধু প্রতিবেশী বাংলাদেশেও। তাদের গভীর দুশ্চিন্তামগ্ন করে তুলেছে। ঝাড়খন্ড থেকে তাদের বিদ্যুৎ রপ্তানি চুক্তি শুধু বিতর্কই সৃষ্টি করেনি, ক্রমশ তা হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের গলার কাঁটা।
পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা: দুশ্চিন্তা সত্যিই গভীর। কারণ, বাংলাদেশ বিলক্ষণ বুঝছে ঝাড়খন্ডের গোড্ডার বিদ্যুৎ চুক্তি তাদের কী গভীর সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। তারা হাঁসফাঁস করছে। পরিত্রাণের উপায় খুঁজছে।