কানাডায় খালিস্তানি শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিন ভারতীয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গতকাল শনিবার ওডিশা রাজ্যের ভুবনেশ্বরে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানান। তিন ভারতীয়কে গ্রেপ্তারের পর এ বিষয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন জয়শঙ্কর।
জয়শঙ্কর বলেন, গ্রেপ্তারের খবর তিনি শুনেছেন। এমনিতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ভারতীয় বলেই মনে হচ্ছে। যাঁদের কোনো ভারতীয় গ্যাংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে পারে। তবে গোটা বিষয়ে কানাডার পুলিশ কী বলছে, তা তাঁরা জানার অপেক্ষায় রয়েছেন।
কানাডার এডমন্টন শহর থেকে ওই তিন ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন করণ ব্রার (২২), কমলপ্রীত সিং (২২) ও করণপ্রীত সিং (২৮)। আদালতের নথি অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা তিন থেকে পাঁচ বছর সে দেশে রয়েছে।
গত বছরের ১৮ জুন নিজ্জরকে হত্যা করা হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সেই হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের হাত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন। ভারতকে তদন্তে সহযোগিতা করার অনুরোধও তিনি জানিয়েছিলেন। ভারত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছিল। ওই অভিযোগের পর দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। আজও তা স্বাভাবিক হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তিন ভারতীয়ের গ্রেপ্তারের ঘটনা নতুন মাত্রা যোগ করল।
জয়শঙ্কর বরাবরই বলে আসছেন, কানাডায় শিখ সন্ত্রাসবাদীরা অনেক দিন থেকেই ভারতবিরোধী প্রচার চালিয়ে আসছে। ভারত তাদের আন্দোলনের বিরোধিতায় কানাডা সরকারকে সক্রিয় হতে অনুরোধ করেছে। কিন্তু ট্রুডো সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার দরুন তারা তা করছে না।
এ নিয়ে দুই সরকারের মধ্যে টানাপোড়েন অব্যাহত। ভুবনেশ্বরে তারই উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, ওই দেশের সরকার সংগঠিত অপরাধীদের সক্রিয় থাকতে দিচ্ছে। বিশেষ করে পাঞ্জাবের অপরাধীদের। তাদের তারা প্রশ্রয় দিচ্ছে।
ভারতের অভিযোগ, নিজ্জর হত্যা সম্পর্কে কানাডা আজও কোনো তথ্য ভারতকে দেয়নি। অথচ ভারত বারবার তা জানানোর দাবি করে আসছে। কানাডার অভিযোগ, ভারত ওই হত্যায় হাত থাকার খবর অস্বীকার করে চলেছে। তারা তদন্তে কোনো সহযোগিতাই করতে চাইছে না।
কানাডায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মা শনিবার বলেছেন, তাঁরা শুনেছেন কানাডা তদন্তের পরই ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। এটা কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই আমাদের কোনো মন্তব্য করা সাজে না।’
সংখ্যালঘু ট্রুডো সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য শিখ জনসমষ্টির সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। ভারত বারবার বলে আসছে, সন্ত্রাসবাদী খালিস্তানিদের তাই তারা তোষামোদ করে। জয়শঙ্কর বলেন, এই লোকজনের ভিসা না দিতে ও আশকারা না দিতে বারবার বলা হয়েছে। এরা ভারতের সঙ্গে কানাডারও ক্ষতি করছে। দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট করছে।