নারী খেলোয়াড়দের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের শীর্ষস্থানীয় এক কুস্তিগির তাঁর দুটি জাতীয় পদক ফিরিয়ে দিয়েছেন। ভিনেশ ফোগাত নামের ওই নারী গতকাল শনিবার একটি সড়কের পাশে পদকগুলো ফেলে আসেন।
ভারতে কুস্তিগিরদের আন্দোলন শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে। ফোগাত ও আরও কয়েক কুস্তিগির অভিযোগ করেন, রেসলিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার (ডব্লিউএফআই) সাবেক প্রধান ব্রিজ ভূষণ সিং বছরের পর বছর ধরে নারী কুস্তিগিরদের যৌন হয়রানি করেছেন।
তবে ব্রিজ ভূষণ সিং সেসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সম্প্রতি ফোগাত তাঁর খেলরত্ন ও অর্জুন পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। দুটি পুরস্কারই তিনি ভারত সরকারের কাছ থেকে পেয়েছিলেন।
ফোগাত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে পুরস্কারগুলো ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, তবে পুলিশের বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। গতকাল শনিবার ফোগাত দিল্লিতে সড়কের পাশে পদকগুলো ফেলে আসেন। তিনি আরও বলেন, কুস্তিগিরেরা যখন ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছেন, তখন এ ধরনের সম্মাননা ধরে রাখাটা অর্থহীন।
ফোগাত তাঁর খেলরত্ন পুরস্কার পান ২০২০ সালে। ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার এটি।
দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফোগাত অভিযোগ করেছেন, কমপক্ষে ১০ নারী কুস্তিগির তাঁকে বলেছেন, ব্রিজ ভূষণের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁরা। ব্রিজ ভূষণ ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির প্রভাবশালী আইনপ্রণেতা ও রাজনীতিবিদ।
যৌন হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের দণ্ডনীয় অপরাধের অভিযোগগুলো নিয়ে ব্রিজ ভূষণ সিংয়ের আদালতে শুনানি চলছে।
ফোগাতের ভাষ্য, ২০২১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
গত মে মাসে আন্দোলনকারী কুস্তিগিরেরা অভিযোগ করেন, দিল্লিতে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তাঁরা।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ব্রিজ ভূষণের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে ভারতের রেসলিং ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে। এতে আন্দোলনকারী কুস্তিগিরেরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।
২৯ বছর বয়সী ফোগাত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস এবং এশিয়ান গেমসে পদক পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক নারী কুস্তিগিরদের একটি পরিবারের এ সদস্য ক্রীড়াঙ্গনে নারীবিদ্বেষী আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকেন।