সিকিমে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা ও আশপাশের এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ডুবেছে তিস্তাপারের অনেক এলাকা। ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে যাওয়ায় আসামের অনেক এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে দার্জিলিংয়ে সড়কে ধস দেখা দেওয়ায় বন্ধ রয়েছে পর্যটকবাহী টয়ট্রেন।
অতিবৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে পশ্চিমবঙ্গে শুধু তিস্তা নয়; তোর্সা, মহানন্দা, কালচিনি, রায়ঢাক ও জলঢাকা নদীর পানি বেড়ে গেছে। এর মধ্যে তিস্তার দুকূল প্লাবিত হয়েছে। গত শনিবার জলপাইগুড়ির গজলডোবার তিস্তা ব্যারাজ থেকে ২ হাজার ৯৬৯ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার দার্জিলিংয়ের রেলস্টেশন ও লেবংকাট রোডে ধস নামে। বন্ধ করা হয় শিলিগুড়ি–দার্জিলিংয়ে চলাচলকারী টয়ট্রেন। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে দার্জিলিংয়ের রক গার্ডেন আর গঙ্গামায়া পার্ক বন্ধ রাখা হয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে টানা বৃষ্টি হচ্ছে।
অতিবৃষ্টি ও তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জলপাইগুড়ি শহরের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার শঙ্কা বাড়ছে পাশের কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারেও। দুর্গতদের উদ্ধারে নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল এনডিআরএফকে। জলপাইগুড়িতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে ব্রহ্মপুত্রসহ একাধিক নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় আসামের ৩৫টির মধ্যে ৩০টি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৪ লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে আসামের ধুবড়ি, ডারাং, কাছার, বরপেটা ও মারিগাঁও জেলার মানুষ। এসব জেলা থেকে এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজার মানুষকে আশ্রয়শিবিরে নেওয়া হয়েছে।
বন্যার পানিতে আসামের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের ৭০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। সেখানকার ৯৪টি পশুকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ গেছে হরিণসহ ১১টি পশুর। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ডিব্রুগড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখেছেন। দুর্গত মানুষকে সার্বিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।