নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ি প্রতীচীর জায়গার বিষয়ে শুনানির জন্য নতুন করে ১৫ দিন সময় দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এর আগে কর্তৃপক্ষ গত ২৯ মার্চ এ নিয়ে শুনানির কথা জানিয়ে নোটিশ পাঠিয়েছিল।
অমর্ত্য সেন বিদেশে থাকায় এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে না পারায় তাঁর আইনজীবী শুনানিতে অংশ নিতে বিশ্বভারতীর কাছে তিন মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। গতকাল বিশ্বভারতী সেই আবেদন খারিজ করে ১৩ এপ্রিল চূড়ান্ত শুনানির জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করে।
শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অমর্ত্য সেনের বাসভবন ‘প্রতীচী’। সেই বাসভবনে বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জায়গা অবৈধভাবে তিনি দখলে রেখেছেন বলে কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করছে।
অমর্ত্য সেন দাবি করেন, ওই জমি তাঁর বাবার আমলের। ১৯৪৩ সালে তাঁর বাবা আশুতোষ সেনকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই জমি ইজারা দিয়েছিল। সেই জমি এখন অমর্ত্য সেনের নামে বীরভূমের বোলপুরের ভূমি দপ্তর থেকে মিউটেশনও করা হয়েছে। সুতরাং অবৈধ দখলের প্রশ্ন নেই।
যদিও বিশ্বভারতী দাবি করেছে, অমর্ত্য সেনের বাবাকে ইজারা দেওয়া হয়েছিল ১ দশমিক ২৫ ডেসিমেল। কিন্তু তিনি অতিরিক্ত ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন। যদিও এই যুক্তি মানছেন না এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, অমর্ত্য সেন কোনো জমি দখল করেননি। ওই জমির কিছু অংশ বিশ্বভারতী থেকে ইজারা নেওয়া, কিছু অংশ নিজেদের কেনা।
অমর্ত্য সেন এখন বিদেশে রয়েছেন। গত ১৩ মার্চ তাঁর শান্তিনিকেতনের বাসভবনে গিয়ে প্রথম একটি নোটিশ দেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেখানে বলা হয়, ‘আগামী ২৯ মার্চ তাঁর বাড়ির সপক্ষের কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে হবে। নইলে আইন অনুযায়ী অবৈধ দখলে থাকা জমি থেকে তাঁকে উচ্ছেদ করা হবে।’
বেশ কিছুদিন আগে বোলপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে অমর্ত্য সেনের বাড়ির মালিক হিসেবে বাবা আশুতোষ সেনের পরিবর্তে তাঁর নামে জমি মিউটেশন করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আগামী ২৯ মার্চ অমর্ত্য সেন বা তাঁর কোনো প্রতিনিধি যেন বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন ভবনের কনফারেন্স হলে উপস্থিত থাকেন। সেখানেই ওই বিতর্কিত জমি নিয়ে শুনানি হবে।’
সেই নোটিশ পেয়ে অমর্ত্য সেনের আইনজীবী তিন মাসের সময় চান। সেই আবেদন মঞ্জুর না করে গতকাল তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিন মাস নয়, শুনানির জন্য ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল বিকেলে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এটিই চূড়ান্ত নোটিশ।