কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (মাঝে) সঙ্গে কুস্তিগির বজরং পুনিয়া (বাঁয়ে) ও বিনেশ ফোগত
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (মাঝে) সঙ্গে কুস্তিগির বজরং পুনিয়া (বাঁয়ে) ও বিনেশ ফোগত

হরিয়ানার নির্বাচনের আগে দুই কুস্তিগির যোগ দিলেন কংগ্রেসে

ভারতের কুস্তির আখড়া থেকে রাজনীতির আঙিনায় পা ফেললেন বিনেশ ফোগত ও বজরঙ্গ পুনিয়া। আজ বুধবার দুজনেই যোগ দিলেন কংগ্রেসে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে তাঁরা জানালেন, এবার থেকে শুরু হবে নতুন লড়াই।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই দুই কুস্তিগির হরিয়ানা বিধানসভার ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করবেন। বিনেশ লড়বেন জুলানা কেন্দ্র থেকে, বজরঙ্গ বাদলি কেন্দ্রে।

বিনেশ ও বজরঙ্গ দুজনেরই বয়স ৩০ বছর। এবার প্যারিস অলিম্পিকে নারীদের ৫০ কেজি ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে ফাইনালে উঠেও বিনেশকে সরে যেতে হয় মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন বেড়ে যাওয়ায়। বজরঙ্গ অলিম্পিকের ট্রায়ালেই কোয়ালিফাই করতে না পারায় সরে গিয়েছিলেন।

এই দুজনেই কুস্তি ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ও বিজেপিদলীয় সংসদ সদস্য ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তাঁরা মেয়ে কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছিলেন। তবু ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে বিজেপি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। অবশ্য লোকসভা ভোটে তাঁর বদলে টিকিট দেওয়া হয়েছিল তাঁর ছেলেকে।

বিনেশ, বজরঙ্গ ও অন্যান্য কুস্তিগির কৃষক আন্দোলনকেও সমর্থন দিয়েছিলেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক দিন বজরঙ্গদের আখড়ায় চলে গিয়েছিলেন। কুস্তিগিরদের প্রশিক্ষণ, তাঁদের সমস্যা, আশা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলেছিলেন। সেই থেকে জল্পনা ছিল, তাঁরা কংগ্রেস যোগ দেবেন। প্যারিসে বাতিল হওয়ার পর বিনেশ দেশে ফিরলে কংগ্রেস তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল। দেশে ফিরে তিনি কৃষক আন্দোলনেও যোগ দিয়েছিলেন। এবার বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়ে তাঁরা শুরু করতে চলেছেন জীবনের নতুন পর্ব।

৯০ আসনবিশিষ্ট হরিয়ানা রাজ্যের বিধানসভার ভোট হওয়ার কথা ছিল ১ অক্টোবর। কিন্তু স্থানীয় উৎসবের কারণে তা পিছিয়ে করা হয়েছে ৫ অক্টোবর।

হরিয়ানারই বাসিন্দা জনপ্রিয় দুই কুস্তিগির যোগ দেওয়ায় রাজ্যে সরকার গঠনের প্রত্যাশা উজ্জ্বল হলো বলে কংগ্রেস মনে করছে। বিনেশ যে আসন থেকে দাঁড়াতে চলেছেন, সেই জুলনা আসনটি রয়েছে জননায়ক জনতা পার্টির (জেজেপি) দখলে। জেজেপির সমর্থনেই বিজেপি সরকার গড়েছিল।

বিনেশের জন্য রাজ্যের নারী মহলের সমর্থন কংগ্রেস বেশি পাবে বলে ধারণা। বজরঙ্গ দাঁড়াবেন বাদলি আসন থেকে। সেটি অবশ্য গত ভোটে কংগ্রেসেরই দখলে ছিল।

গত লোকসভা নির্বাচনে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র কেন্দ্রটি কংগ্রেস ছেড়েছিল আম আদমি পার্টিকে (আপ)। কিন্তু আপ তা জিততে পারেনি। রাহুল গান্ধী চাইছেন এবারও আপের সঙ্গে জোট বাঁধতে। ফলে জাতীয় রাজনীতিতে ‘ইন্ডিয়া’ জোট এক বার্তা দিতে পারবে বলে রাহুলের ধারণা।

জোট বাঁধতে রাহুলের প্রস্তাব আপও সমর্থন করেছে। যদিও হরিয়ানা প্রদেশ কংগ্রেস মনে করছে, আপের সমর্থন ছাড়াই কংগ্রেস হরিয়ানা দখল করতে পারে। আপ চাইছে ৯-১০টি আসন। কংগ্রেস ৪-৫টির বেশি ছাড়তে নারাজ। দু-এক দিনের মধ্যেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার কথা।