কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় কলেজটির অধ্যক্ষ সন্দ্বীপ ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। আজ রোববার অধ্যক্ষ ছাড়াও তাঁর স্বজনদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
সিবিআইয়ের একাধিক সূত্র আজ বিকেলে জানায়, কলকাতায় অন্তত ১৫টি স্থানে সন্দ্বীপ ঘোষ ও তাঁর স্বজনদের বাড়িতে অভিযান চলছে। এদিন সকালে আর জি করের ফরেনসিক মেডিসিন ও টক্সিকলোজি বিভাগের ডেমোনেস্ট্রেটর দেবাশীষ সোমের বাড়িতেও অভিযান চালায় সিবিআইয়ের একটি দল।
তিন দিন আগে আর জি করের সাবেক ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট আখতার আলী একটি মামলা করেন। সেই মামলায় প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেন তিনি। বিশেষ করে দেবাশীষ সোমের নাম উল্লেখ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআই আজ তল্লাশি অভিযান চালায়।
কলকাতা হাইকোর্টের আদেশের পর গতকাল শনিবার আর জি করের অধ্যক্ষ সন্দ্বীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করেছে। মেডিকেল কলেজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে তদন্ত করতে সিবিআইকে নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে।
এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের গঠিত একটি বিশেষ তদন্তকারী দল কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের কার্যালয়ে যায়। সেখানে গিয়ে মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নথি তারা সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে। এসব তথ্য পাওয়ার পরপরই সিবিআই এজাহার দাখিল করে এবং গতকাল আলিপুর চিফ জুডিশিয়ারল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এজাহারের একটি অনুলিপি দাখিল করে।
কলকাতা হাইকোর্ট তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে অনুযায়ী আগামী ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিবিআইকে প্রতিবেদন দিতে হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আর জি কর হাসপাতালে একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনার শুনানি করেন। শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআইএসএফ) কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।
৯ আগস্ট কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শিক্ষানবিশ সেই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর প্রতিবাদে কলকাতাসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভে নামেন ভারতের চিকিৎসকসহ সাধারণ জনতা। বিক্ষোভ এখনো চলছে।