কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়ার দাবি উঠেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যের বাম দল এসইউসিআই অর্ধদিবস বাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বুধবার বেহালায় ভারতের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্–অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেছেন, ‘আমি চিকিৎসকদের পায়ে ধরে অনুরোধ করছি, আপনারা হাসপাতালে পরিষেবা দিন। প্রত্যাহার করুন কর্মবিরতি।’ তবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়নি।
মমতার ভাইপো ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘পড়ুয়াদের দাবি ন্যায্য ও ন্যায়সংগত।’ তিনি পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুর্বৃত্তদের ধরতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সুখেন্দু শেখর রায় এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে এসে দাঁড়ান। তিনি নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার প্রতিবাদে যোধপুর পার্কে নেতাজির ভাস্কর্যের পাদদেশে গতকাল বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘটে বসেন। প্রখ্যাত অভিনেতা প্রসেনজিৎ ও দেব এই নারী চিকিৎসক হত্যার প্রতিবাদ করেন।
এই হামলার প্রতিবাদে গতকাল আর জি কর হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুর চলে। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনিত কুমার গোয়েল। তিনি বলেছেন, দুর্বৃত্তদের ধরে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এর মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আর জি কর হাসপাতালে গভীর রাতে হামলা চালিয়েছে মমতার গুন্ডারা। চাইছে সব প্রমাণ লোপাট করতে।’
অন্যদিকে তৃণমূল বলেছে, হামলার পেছনে বিজেপি ও সিপিএমের হাত রয়েছে।
নারী চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গতকাল রাতে কলকাতার রাজপথ দখল করেন বিভিন্ন এলাকার নারীরা। হাতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, মোমবাতি নিয়ে তাঁরা রাত দখলের আন্দোলনে শরিক হন। স্লোগান ওঠে, ‘মেয়েরা রাত দখল করো’।
এই লক্ষ্যে গতকাল রাতে রাজ্যের নারীসমাজ সড়ক দখল করে রাতভর প্রতিবাদ মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।