ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। এবার সেই ধাক্কা লেগেছে সাত রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনেও। আজ শনিবার ১৩ আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনের কমিশনের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট ১০ আসনে জিতেছে। অন্যদিকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট মাত্র দুই আসনে। বাকি ১ আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখন্ড ও হিমাচল প্রদেশ—এই ৭ রাজ্যের ১৩ আসনে ১০ জুলাই উপনির্বাচনে ভোট হয়েছে। এই ১৩ আসনের মধ্যে আগে বিজেপি, কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস—প্রতিটি দলের দুটি করে আসন ছিল। একটি করে আসন ছিল উত্তর প্রদেশের বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), বিহারের জনতা দল (ইউনাইটেড), তামিলনাড়ুর দ্রাবিড়া মুনেত্রা খাজাগম (ডিএমকে) এবং একটি ছিল আম আদমি পার্টির (আপ)। বাকি তিনটি আসন ছিল স্বতন্ত্র।
এবার পরিস্থিতি ভিন্ন দেখা যাচ্ছে। বিজেপি তাদের আসনে পিছিয়ে রয়েছে এবং কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকেসহ ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছে প্রায় সব আসনে। আজ শনিবার নির্বাচন কমিশন ভোট গণনা শেষে এসব আসনের ফলাফল ঘোষণা করে।
এর মধ্যে হিমাচল প্রদেশের তিন আসনের একটিতে বিজেপি ও দুটিতে কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। দেহরা আসনে প্রার্থী ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর স্ত্রী কমলেশ ঠাকুর। তিনি বিজেপির প্রার্থী হোশিয়ার সিংকে ৯ হাজার ৩৯৯ ভোটে হারিয়ে দেন।
পশ্চিমবঙ্গে চার আসনের চারটিতেই জিতেছে ইন্ডিয়া জোটের শরিক তৃণমূল কংগ্রেস। এই চার আসন হচ্ছে কলকাতার মানিকতলা, নদীয়ার রানাঘাট দক্ষিণ, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ও উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ। বিজেপির যে প্রার্থী গতবার রায়গঞ্জ আসনে জিতেছিলেন, সেই কৃষ্ণ কল্যাণীই এবার আবার জিতেছেন। তবে এবার তিনি তৃণমূলের প্রার্থী।
দিল্লির আম আদমি পার্টি (আপ) পাঞ্জাব রাজ্যের জালান্দর পশ্চিম আসনে জয়ী হয়েছেন। বিজেপি জিতেছে মধ্যপ্রদেশের আমরওয়ারা আসনে।
ইন্ডিয়া জোটের শরিক দ্রাবিড়া মুনেত্রা খাজাগমের (ডিএমকে) প্রার্থী তামিলনাড়ুর বিক্রাবান্দি আসনে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
উত্তরাখন্ড রাজ্যের বদ্রিনাথ ও মঙ্গলাউর—এই দুই আসনে এবার কংগ্রেসের দুই প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। মঙ্গলাউর আসনে কাজী মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন মাত্র ৪২২ ভোটের ব্যবধানে বিজেপির প্রার্থী কারতার সিং ভাদানাকে হারিয়ে দেন।
বিহার রাজ্যের রুপাউলি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শংকর সিং নীতীশ কুমারের জনতা দলের (ইউনাইটেড) প্রার্থী কালাধর মণ্ডলকে ৮ হাজার ২৪৬ ভোটে হারিয়ে জয়ী হন।
বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএর কোনো শরিক দলই এবার আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। তবে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী শেষ পর্যন্ত কোন দলে যোগ দেন, এখন সেটাই দেখার।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৪০ আসনে জয়ী হয়েছিল। সরকার গঠনের জন্য দরকার ২৭২ আসন। এ অবস্থায় জোটের অন্যতম শরিক চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) ও নীতীশ কুমারের জনতা দলের (ইউনাইটেড) সমর্থন নিয়ে নরেন্দ্র মোদি জোট সরকার গঠন করেন। ওই নির্বাচনে নাইডুর টিডিপি ১৬ ও নীতীশের দল ১২ আসনে জয়ী হয়।