পাকিস্তানের কারাগারে ছয় বছর আটক থাকার পর গত মঙ্গলবার নিজ দেশে ফিরেছেন ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা হামিদ নেহাল আনসারি (৩৩)। ফিরে তিনি সবার উদ্দেশে একটাই উপদেশ দিয়েছেন, ‘ফেসবুকে কখনো প্রেম কোরো না।’
প্রেমের টানে ২০১২ সালে পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিলেন আনসারি। ফেসবুকে পাকিস্তানের এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। পরিচয় থেকে হৃদয়ের আদান-প্রদান। কিন্তু তরুণীর পরিবার থেকে তাঁকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হলে আনসারি সিদ্ধান্ত নেন, তিনি পাকিস্তানে যাবেন। প্রিয় মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসবেন ভারতে। আফগানিস্তান সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন আনসারি। ভেবেছিলেন, শেষটা হয়তো বলিউডের সিনেমার মতো হবে। কিন্তু খবর পেয়ে আগে থেকেই প্রেমিকার বাড়িতে বসে ছিল পুলিশ। সেখানে পৌঁছামাত্রই আনসারিকে গ্রেপ্তার করে তারা। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানে বিচারের মুখোমুখি করা হয় তাঁকে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। এ মাসে তাঁর কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হয়।
গত মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আনসারি পাকিস্তানের মারদান কারাগার থেকে মুক্ত হন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ওয়াঘা-আটারি সীমান্তে আনা হয় তাঁকে। এরপর ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। মাতৃভূমির মাটি স্পর্শ করা মাত্রই আনসারি মাটিতে মাথা ঠেকান। সীমান্তে অপেক্ষারত মাকে জড়িয়ে ধরে আবেগে কাঁদতে থাকেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দেখা করে তাঁকে ‘বেটা’ সম্বোধন করেছেন। জড়িয়ে ধরেছেন বুকে।
আনসারি গত শুক্রবার এএফপিকে ফোনে বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির মুহূর্তটি হলো ভারতে আবার ফেরত আসার মুহূর্ত। এই অগ্নিপরীক্ষার জন্য আমি কাউকে দায়ী করছি না। কারণ, ভুল আমারই ছিল। যদিও আমার উদ্দেশ্য ভালো ছিল, কিন্তু আমি ভুল রাস্তা বেছে নিয়েছি।’ সবার উদ্দেশে আনসারির উপদেশ, ‘আমার মতো কেউ ভুল কোরো না। অচেনা লোকের সঙ্গে কেউ আবেগে ভেসো না। ফেসবুকের মেয়ের প্রেমে পোড়ো না।’