ভারতের দুই শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভারত সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে উপহাস করেছে। তাঁরা বলেছেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে ১৯৪৭ সালে কাশ্মীরকে সংযুক্তকরণের সময় যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা ভেঙে দেওয়া হলো।
ভারতের বর্তমান বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দ্বিখণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যটিকে দ্বিখণ্ডিত করে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সৃষ্টি করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন ভাষাভাষী আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন কবি-সাহিত্যিক, লেখক, নাট্যকার, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সমাজের বিশিষ্টজনেরা।
গতকাল শুক্রবার তাঁদের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পার্লামেন্টে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করার আগে কোনো মহলের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। কাশ্মীরে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনো ধর্ম, বর্ণের মানুষের মতামত নেওয়া হয়নি। অন্য মতাদর্শের রাজনৈতিক লোকজনের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়নি, তাঁদের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। বরং কাশ্মীরজুড়ে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় ভিন্ন মতকে ভয় পাচ্ছে সরকার।
বিশিষ্টজনদের দাবি, কাশ্মীরে গণতন্ত্র ফেরাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সমস্ত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুক সরকার। একই সঙ্গে, ভারত সরকারকে ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন ভাষাভাষী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিদ্বজ্জনেরা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন অমিতাভ ঘোষ, অমিত চৌধুরী, পেরুমল মুরুগান, জেডি পাওয়ার, বেজওয়া উইলসন, শশী দেশপান্ডে, শরণকুমার লিম্বালে, টিএম কৃষ্ণন, সি সাইনাথ, দামোদর মোজো, নয়নতারা সেহগাল, অশোক বাজপেয়ি, দলীপ কাউর তিওয়ানা, বামা, শম্ভাজী ভগত, জেরি পিন্টো প্রমুখ।