পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হলো নূপুর শর্মা ও তাঁর পরিবারকে। বিজেপির এই সাবেক মুখপাত্রের জন্য দিল্লি পুলিশ মঙ্গলবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। দিল্লি পুলিশের এক কর্মকর্তার বয়ানে বলা হয়েছে, নূপুর অভিযোগ করেছেন, তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে অবমাননা করার অভিযোগে বিজেপি নূপুর শর্মাকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং দলটির নেতা নবীন কুমার জিন্দলকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে। তাঁদের এই মন্তব্য ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
গত মাসের শেষ দিকে এক টেলিভিশন বিতর্কে অংশগ্রহণ করে মহানবী (সা.) কে নিয়ে ওই আপত্তিজনক ও অবমাননাকর মন্তব্য করেন নূপুর। গত ২৮ মে মুম্বাইয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করেন মহারাষ্ট্রের ইসলামি সংগঠন রাজা একাডেমির যুগ্ম সম্পাদক ইরফান শেখ। মুম্বাই পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে এখনো কোনো ব্যবস্থা না নিলেও গতকাল মহারাষ্ট্র পুলিশ নূপুরকে সমন জারি করে। তাতে বলা হয়েছে, ২২ জুন মহানবী (সা.) কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য নিতে হবে। সমন জারির পরিপ্রেক্ষিতে কী করবেন, সে বিষয়ে পুলিশকে এখনো কিছু জানাননি তিনি। নূপুরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত দেওয়া, ধর্ম অবমাননা, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো, জনজীবনে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
নূপুর ও নবীন জিন্দলের কুমন্তব্য আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ভাবমূর্তি কলুষিত করেছে। বিভিন্ন ইসলামি দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। কোনো কোনো দেশ ভারতের প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনা দাবি করেছে। গতকাল পর্যন্ত ১৫টি দেশ সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছে। কেউ কেউ ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পশ্চিম এশিয়ার ইরাক, ইরান, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, জর্ডান ও বাহরাইন। রয়েছে তুরস্ক, উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। আরও রয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া।
এই সমালোচনার জবাবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, অবমাননাকর মন্তব্য যাঁরা করেছেন, দলে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ কেউ নন। ভারত সরকারের মনোভাব এমন নয়। ভারত সব ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল। যেকোনো ধর্মীয় অপমানের বিরোধী। ওই মন্তব্যের পরপরই নূপুর ও নবীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিজেপি। দলীয় বিবৃতিতে বলা হয়, নবীনকে দল থেকে বিতাড়িত ও নূপুরকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এই সঙ্গে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছে, আপাতত মন্দির-মসজিদ নিয়ে কোনো টেলিভিশন বিতর্কে দলের কোনো পদাধিকারী বা নেতা যেন অংশ না নেন।