ইতিমধ্যেই চৌদ্দ শিকের ভেতর দিন কাটাচ্ছেন ভারতের বিতর্কিত ‘ধর্মগুরু’ গুরমিত রাম রহিম সিং। এর মধ্যেই সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রায়ে আজ বৃহস্পতিবার রাম রহিমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ২০০২ সালে এক সাংবাদিককে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে রাম রহিমের বিরুদ্ধে। ১১ জানুয়ারি এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন রাম রহিম। এবার আদালত তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন। হরিয়ানার পঞ্চকুলার একটি বিশেষ আদালত এই রায় দিয়েছেন। রাম রহিমের সঙ্গে সঙ্গে আরও তিন ব্যক্তি এই মামলায় সাজা পেয়েছেন। তাঁদেরও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন আদালত। দোষী সাব্যস্ত অপর তিনজন হলেন-কুলদীপ সিং, নির্মল সিং ও কৃষ্ণ লাল।
৫১ বছর বয়সী রাম রহিম বর্তমানে ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। নারী ভক্তদের (সাধ্বী) ধর্ষণের দায়ে এই সাজা পেতে হচ্ছে রাম রহিমকে। রোহতাকের সুনারিয়া কারাগারে রয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই ভিডিও কনফারেন্সে আদালতে হাজিরা দেন তিনি।
গত শুক্রবার হরিয়ানার বিশেষ আদালত সাংবাদিক হত্যায় দোষী সাব্যস্ত করেন রাম রহিমকে। এই বিতর্কিত ‘ধর্মগুরু’র অপরাধ, তাঁর নির্দেশে রাম চন্দ্র ছত্রপতি নামের এক সাংবাদিককে ২০০২ সালের ২৪ অক্টোবর প্রকাশ্যে গুলি করা হয়। আহত হয়ে ওই বছরের ২১ নভেম্বর মারা যান রাম চন্দ্র। নিহত এই সাংবাদিক সেখানকার ‘পুরা সাচ’ পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন। রাম রহিমের নারী ভক্তদের ধর্ষণ করার খবরটি ওই পত্রিকায় প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হন রাম রহিম। ওই সাংবাদিককে হত্যা করতে তিনি সহযোগীদের নির্দেশ দেন। পরে রাম রহিমের দুই সহযোগী গুলি করেন সাংবাদিক রাম চন্দ্রকে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের পর ২০০৩ সালে তার তদন্তভার দেওয়া হয় ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইকে। প্রথমে ওই হত্যাকাণ্ডে রাম রহিমের নাম ছিল না। পরে ২০০৬ সালে রাম রহিমের তৎকালীন গাড়ির চালক খাট্টা সিংয়ের সাক্ষ্যের মধ্যে দিয়ে এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ পায় সিবিআই। ওই চালক গুলির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।
সাধ্বীদের করা ধর্ষণ মামলায় ২০১৭ সালের আগস্টে রাম রহিমকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে দুই সাধ্বীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিল। ওই সময় রাম রহিমকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পঞ্চকুলায় দাঙ্গা বেঁধে গিয়েছিল। রাম রহিমের অনুসারীরা তাঁকে গ্রেপ্তারে বাধা দিয়েছিলেন। ওই দাঙ্গার ঘটনায় নিহত হয়েছিল ৩০ জন এবং অনেক সম্পদ বিনষ্ট হয়েছিল।