ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) সদস্যরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি, উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায়।
ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) সদস্যরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি, উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায়।

সরু সুড়ঙ্গে আটকে ছিলেন ১৬ জন

ভারতের উত্তরাখণ্ডে আজ রোববার হিমবাহ ধসের পর আকস্মিক বন্যা ও প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যাওয়া নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের একটি সরু সুড়ঙ্গ থেকে ১৬ জন কর্মীকে উদ্ধার করেছে দেশটির ইন্দো–তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)। আজ রাজ্যের চামোলি জেলার জোশিমঠে এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ওই উদ্ধারকাজের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, আইটিবিপির সদস্যরা সরু সুড়ঙ্গ থেকে দড়ি দিয়ে একজনকে বের করে আনছেন। লোকটিকে সুড়ঙ্গ থেকে বের করে আনার পরপরই আইটিবিপির সদস্যদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। সীমান্ত নিরাপত্তায় কাজ করলেও বাহিনীটির সদস্যরা ওই দুর্যোগে উদ্ধারকাজে অংশ নেন।

স্থানীয় প্রশাসন বলেছে, ওই টানেল থেকে ১৬ কর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে। হিমবাহ ধসের পর ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের রিশিগঙ্গা ও এনটিপিসি বিদ্যুৎকেন্দ্র। উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ১৭০ জন।

উদ্ধার করে ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চামোলি জেলায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার জোশিমঠে এলাকায় হঠাৎ করেই হিমবাহটি ভেঙে পড়ে। এতে অলকনন্দ ও ধউলিগঙ্গায় এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। প্রাণহানি এড়াতে স্থানীয় হাজারো বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় নদীর ওপর নির্মাণ রিশিগঙ্গা ও এনটিপিসি বিদ্যুৎকেন্দ্র। দুর্যোগ প্রতিরোধ দল মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে কাজ করছেন। হেলিকপ্টারে করে দুর্ঘটনার গতিবিধি নজরদারি করছেন সেনাসদস্যরা। এ ছাড়া চিকিৎসা দল ও  প্রকৌশলী টাস্কফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত টুইট করে বলেছেন, এনটিপিসি ও রিশিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১৬০ জনের মতো মানুষ কাজ করতেন। তাঁদের অবস্থান শনাক্ত ও উদ্ধার করার কাজ করছে সেনাবাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ বাহিনী (এনডিআরএফ) ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। উদ্ধার কার্যক্রম জোরালোভাবে চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধারকাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসা দল দুর্গত এলাকায় পৌঁছেছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় জোশিমঠের একটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রীনগর, রিশিকেশ, জলিগ্রান্ট ও দেরাদুনের হাসপাতালগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা সাধ্যমতো দুর্যোগ মোকাবিলার চেষ্টা করছি।’

দুর্যোগের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের সঙ্গে কথা বলেন। দুর্ঘটনাটি ধারাবাহিকভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন জানিয়ে টুইট করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘উত্তরাখণ্ডের ওই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পুরো ভারত উত্তরাখণ্ডের পাশে রয়েছে এবং জাতি প্রত্যেকের নিরাপদের জন্য প্রার্থনা করছে।’