>উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে যে দল ভালো করবে, সেই দলেরই বেশ সুযোগ থাকবে দেশ পরিচালনার।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট গ্রহণ আজ অনুষ্ঠিত হবে। সাত ধাপের এই নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে ২৩ মে। কোন দল দিল্লির মসনদে বসবে, তার অনেকটা নিশ্চিত হবে ওই দিন। তবে সবার দৃষ্টি ভারতের জনবহুল তথা বৃহৎ রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও বাংলাভাষী পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফলের দিকে। কারণ, এই দুই রাজ্যে যে দল ভালো করবে, সেই দলেরই বেশ সুযোগ থাকবে দেশ পরিচালনার।
ভারতের অন্য সব রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন উত্তর প্রদেশে, ৮০টি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই আসনের মধ্যে ৭১টিতে জিতেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। উত্তর প্রদেশে বড় জয়ের কারণে ৫৪৫ আসনের মধ্যে ২৮২টিতে জিতে বিজেপি দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন দল কংগ্রেসকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। মাত্র ৪৪ আসন পাওয়া কংগ্রেস সেবার উত্তর প্রদেশে পেয়েছিল মাত্র দুটি আসন।
বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক অশোক উপাধ্যায় বলেন, ‘দিল্লিতে যেতে চাইলে উত্তর প্রদেশে আপনাকে ভালো করতেই হবে।’
বিরোধী দলগুলোর দুর্বলতা এবং ধর্মীয় ভাবানুভূতিসহ নানা বিষয়ের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশের অসম নানা বর্ণের জাতিগোষ্ঠীর একটি বিরাট অংশকে মোদির দিকে নিয়ে আসতে বিজেপির আগের নির্বাচনী পদ্ধতি বেশ কাজে দিয়েছিল। তবে এবার নির্বাচনের আগে রাজ্যটিতে মোদিবিরোধী জোট হয়েছে। এই জোটের একটি বহুজন সমাজবাদী পার্টি, যার নেতৃত্বে ‘দলিত রানী’ মায়াবতী। দলিত সম্প্রদায়ের সমর্থনে তিনি চারবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব ও রাষ্ট্রীয় লোকদল পার্টি।
সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র বন্দনা সিংহ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বিজেপিকে হটানো এবং সমস্ত বিরোধী দলকে একত্র করা।’
উত্তর প্রদেশ রাজ্যের ক্ষমতাও বিজেপির দখলে। দলটি আশাবাদী, উত্তর প্রদেশে এবারও তারা ভালো করবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলও জানে, এই রাজ্যে তারা হারতে চলেছে।
ভারতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। এই রাজ্যে ৪২টি আসন রয়েছে। আগের নির্বাচনে এই রাজ্যের বেশির ভাগ আসনে জিতেছিল রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গ থেকে তূণমূল নেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গদিছাড়া করতে উঠেপড়ে লেগেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এ জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে ওই রাজ্যে একাধিক সমাবেশ করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় মমতা। তবে মোদির অভিযোগ, মমতা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় রয়েছেন। আর সেই অভিবাসীদের বিতাড়ন করতে মোদি পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বিল আনার ঘোষণা দিয়েছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও নয়াদিল্লিভিত্তিক নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরির জ্যেষ্ঠ ফেলো হিমাংশু রায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ ভোটের রাজনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শক্ত প্রভাব রয়েছে এখানে। মোদির ঘোর বিরোধী তিনি। তিনি রাজ্য থেকে বামপন্থীদের বিতাড়ন
এখন তিনি মোদিকে এই রাজ্যে থেকে দূরে রাখা চেষ্টা করছেন।