এর আগে পাঁচটি কন্যাসন্তান জন্ম দিয়েছেন অনিতা দেবী। আবার চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা তিনি। স্বামীর প্রত্যাশা, এবার ছেলে হোক। তবে এবার ছেলে হবে কি না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে স্বামী পান্নালাল নিজেই অনিতার পেট কেটে ফেলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের বাদাউন জেলায়।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, পান্নালাল কাস্তে দিয়ে অনিতার পেট কেটেছিলেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর, গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পান্নালাল বলছেন, এক সাধু তাঁকে নাকি বলেছিলেন, তিনি আবার কন্যাসন্তানের বাবা হতে চলেছেন।
উত্তর প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, পান্নালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। অনিতার অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। তাঁকে রাজধানী নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অনাগত শিশুটি মারা গেছে।
অনিতা দেবী ও পান্নালালের সাংসারিক অবস্থান নিয়ে অনিতার বোন স্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুত্রসন্তান নিয়ে প্রায়ই তাঁদের ঝগড়া হতো। অনিতার ভাই বলেন, প্রথমে তাঁর বোনকে বেরেলির একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে গতকাল রোববার তাঁকে দিল্লির হাসপাতালে নেওয়া হয়।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পান্নালাল। স্থানীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, অনিতাকে লক্ষ্য করে তিনি একটি কাস্তে ছুড়ে মেরেছিলেন। তাঁর কোনো ধারণা ছিল না, এতে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটবে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করছে।
পুত্রসন্তানের চাহিদা এবং এ–সংক্রান্ত নারী নির্যাতনের ঘটনা ভারতে অহরহ ঘটে থাকে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) গত জুন মাসের প্রতিবেদন অনুসারে, বিগত ৫০ বছরে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ কন্যাশিশু নিখোঁজ হয়েছে। গর্ভপাতের কারণে প্রতিবছর ৪ লাখ ৬০ হাজার মেয়ে শিশুর মৃত্যু হয়।
২০১৮ সালে ভারত সরকারের দেওয়া এক প্রতিবেদন অনুসারে, পুত্রসন্তানের চাহিদার কারণে ২ কোটি ১০ লাখ ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ মেয়ে শিশু জন্ম নিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি পুত্রসন্তানের প্রত্যাশায় পরিবারগুলো সন্তান নেওয়া অব্যাহত রাখে।