ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএবি) বিরুদ্ধে সোমবার থেকে আন্দোলনে নামছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘নো সিএবি, নো এনআরসি’ স্লোগান নিয়ে সোম, মঙ্গল ও বুধবার তিন দিন কলকাতা ও হাওড়ায় দলের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হবেন মমতা।
কলকাতার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, এই প্রতিবাদে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপিবিরোধী সব দলকে অংশ নিতে এবং শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিএবির বিরুদ্ধে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে এখন পর্যন্ত ১২টি মামলা হয়েছে। আরও মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে বিভিন্ন সংগঠন ঘোষণা দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলে অনুমোদন দেওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয়েছে সিএবিবিরোধী আন্দোলন। দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ, আন্দোলন, রেল অবরোধ, স্টেশনে ট্রেন অবরোধসহ জ্বালাও–পোড়াওয়ের বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় রাজ্যে সিএবির বিরুদ্ধে জোর আন্দোলন চলছে। কলকাতার পার্ক সার্কাসসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সিএবির বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন, মিছিল, সভা-সমাবেশ ও প্রতিবাদ হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএবি) এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবেন। তিনি এই লড়াইকে দ্বিতীয় স্বাধীনতাসংগ্রাম বলে অভিহিত করেন। দলীয় সূত্রমতে, মমতা ২০ ডিসেম্বর নিজ দল তৃণমূল কংগ্রেসের সদর দপ্তরে দলীয় বিধায়ক-সাংসদ ও জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন। নাগরিকত্ব বিল আইনে পরিণত হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস কী করবে, এ বৈঠকে তা ঠিক করবেন তিনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ গতকাল শুক্রবার বলেছেন, মমতা দিদির ইন্ধনেই অশান্তির আগুন ছড়াচ্ছে বাংলায়। তিনি বাংলায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগাতে চাইছেন।
সিএবি আন্দোলনের জেরে ভারতের বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাল রোববার মেঘালয়ের রাজধানী শিলং সফর বাতিল করেছেন। নর্থ ইস্টার্ন পুলিশ একাডেমির একটি অনুষ্ঠানে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
অপর দিকে ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে সিএবি মানা হবে না। এনআরসিও কার্যকর করা হবে না। গতকাল তাঁর সঙ্গে ওডিশার ভদ্রক, বালাসোর ও জয়পুর জেলার একটি মুসলিম প্রতিনিধিদল দেখা করতে এলে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সিএএবির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ১২টি মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আরও মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে ভারতের বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ প্রথম আইনটির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে।