ভারতের বিবৃতি

শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্রের পক্ষে সব সময় থাকবে ভারত

শ্রীলঙ্কাকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই দেশটির সরকারি অর্থব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে
ছবি : এএফপি

শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারত জানাল, দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, গণতান্ত্রিক উপায়ে দ্বীপরাষ্ট্রের জনগণ যা চাইবেন, ভারত সেই স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট হবে।

অরিন্দম বাগচির এই অভিমতের মধ্য দিয়ে সম্ভবত এটাই প্রতিপন্ন হচ্ছে যে শ্রীলঙ্কার এই ডামাডোলে সে দেশের সেনাবাহিনী ক্ষমতা করায়ত্ত করুক, ভারতের কাছে তা অভিপ্রেত নয়।

অর্থনৈতিক সংকট ঘিরে শ্রীলঙ্কায় শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক সংকট। পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে সপরিবার ত্রিঙ্কোমালির নৌঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়ার আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে সরকার ও বিরোধীপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে জরুরি ক্ষমতা। এই অবস্থায় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সংক্ষিপ্ত বিবৃতি।

অরিন্দম বাগচি

ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে দুই দেশের চিরন্তন সম্পর্কের উল্লেখের মধ্য দিয়ে ভারত গণতান্ত্রিক আবহ রক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বিবৃতির মধ্য দিয়ে ভারত ওই দেশে গণতান্ত্রিক আবহের ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথাই মনে করিয়ে দিল।

বিবৃতিতে ভারত ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির কথা মনে করিয়ে জানিয়েছে, অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে ভারত শুধু এই বছরেই তাদের সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার সাহায্য করেছে। তা ছাড়া দিয়েছে খাদ্য, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে গত সোমবার পদত্যাগ করেছেন। এতে দেশটিতে ঐক্যের সরকারের ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট পদ থেকে গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ করার দাবি করছেন।

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে বিক্ষোভে ফুঁসছেন শ্রীলঙ্কার জনগণ। খাদ্যপণ্য, ওষুধ ও জ্বালানির অভাব দেশজুড়ে। এ নিয়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের অনুসারীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালালে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তবে তারপরও বিক্ষোভ-সহিংসতা থামেনি।

হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে রাতভর সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। রাজাপক্ষেদের পৈতৃক বাড়িসহ অনেক মন্ত্রী-এমপির বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনও ঘিরে রেখেছিলেন তাঁরা। এর মধ্যে পরিবার নিয়ে হেলিকপ্টারে উড়ে একটি নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ওই ঘাঁটির পাশেও বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিক্ষোভ-সহিংসতা চলতে থাকায় শ্রীলঙ্কায় কারফিউ আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।