শাস্তি পেলেন শচীন পাইলট, এখন কী করবেন

শচীন পাইলটকে রাজ্য উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শচীনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রদেশ সভাপতির পদ থেকেও। ছবি: সংগৃহীত
শচীন পাইলটকে রাজ্য উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শচীনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রদেশ সভাপতির পদ থেকেও। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্রোহ করেছিলেন। পেলেন তার শাস্তি। সংখ্যাধিক্য বিধায়কের সমর্থন পেয়ে আজ মঙ্গলবার ভারতের রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ছেঁটে দিলেন বিদ্রোহী নেতা শচীন পাইলটের ডানা। কেড়ে নেওয়া হলো উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব। মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হলো শচীনের অনুগামী দুই মন্ত্রী রমেশ মিনা ও বিশ্বেন্দ্র সিংকে। শচীনকে সরিয়ে দেওয়া হলো প্রদেশ সভাপতির পদ থেকেও। পরিষদীয় দলের বৈঠকের পর এই ঘোষণা করেন দিল্লি থেকে জয়পুরে পাঠানো সোনিয়া গান্ধীর দূত দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা।

দলের স্বার্থে শচীনকে ফোন করে সংযত হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। একই অনুরোধ ছিল রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরও। বলেছিলেন, ‘আপনি নবীন। ভবিষ্যৎ আপনারই।’ কিন্তু নিজের দাবিতে অনড় থাকেন শচীন। সোমবারের পরিষদীয় বৈঠকে তিনি যোগ দেননি। দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার আরও একবার পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়। অনুগামীসহ শচীন ওই বৈঠকেও গরহাজির থাকেন। এরপরেই শতাধিক বিধায়কের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে পুনরায় পরিষদীয় নেতা নির্বাচন করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় শচীনের সব পদ। বৈঠকের পরেই গেহলট রাজভবনে গিয়ে দেখা করেন রাজ্যপালের সঙ্গে। এখন দেখার, শচীন ও তাঁর অনুগামীদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয় কি না।

অনুগামীসহ শচীন রয়েছেন দিল্লির অদূরে গুরুগ্রামের এক রিসোর্টে। মঙ্গলবার সেই রিসোর্টের এক ছবি প্রচার করা হয়। তাতে দেখা যায়, ১৬ জন বিধায়ক গোল হয়ে বসে রয়েছেন। ছবিতে শচীন ছিলেন না। তাঁর দাবি, সঙ্গে আছেন অন্তত ২০ জন। মঙ্গলবার পরিষদীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্তত ১০০ জন। বিজেপির চাপে খুব সম্ভবত রাজ্যে আরও একবার আস্থা ভোটে গেহলটকে গরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে। রাজ্য বিধানসভার মোট সদস্য ২০০।

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সঙ্গে শচীন পাইলটের এই ছবি এখন স্মৃতি হতে চলেছে। ছবি: সংগৃহীত

রাজ্যের এই অস্থিরতার জন্য সুরজেওয়ালা সরাসরি দায়ী করেন বিজেপিকে। তিনি বলেন, বিজেপির চক্রান্তে শামিল হয়ে শচীন নির্বাচিত সরকারকে ফেলার চেষ্টা করেছেন। তাই দুঃখের সঙ্গে কংগ্রেস কিছু সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তিনি জানান, শচীনের জায়গায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েছেন গোবিন্দ সিং দোতাসরা।

পদ খোয়ানোর পরেই শচীন পাইলট টুইট করে বলেন, ‘সত্যকে চেপে রাখা যায়, হারানো যায় না।’

রাহুল গান্ধী কংগ্রেস সভাপতির পদ ছেড়ে দেওয়ার পর একটার পর একটা সংকটের মোকাবিলা করতে হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে। প্রথম সারির দুই যুবনেতা বিদ্রোহ করলেন। দল ছেড়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। দলত্যাগের মুখে দাঁড়িয়ে শচীন পাইলট। পরিস্থিতি যা, তাতে অচিরে রাজস্থানেও ফের ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে বিজেপি।