বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের দপ্তরে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। বাবুল সুপ্রিয় বিজেপির আসানসোলের সাংসদ হয়ে দুবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়ও ঠাঁই পান।
মোদির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদল হলে বাবুল সুপ্রিয় মন্ত্রিত্ব হারান। এরপরই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। গত ৩১ জুলাই তাঁর ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘চললাম। বিদায়!’ প্রকাশ্যে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বাবুল সুপ্রিয়কে কলকাতার টালিগঞ্জ আসনে বিধায়ক পদে মনোনয়ন দেয়। সেখানে তিনি তৃণমূল প্রার্থীর কাছে হেরে যান। তবে তিনি তাঁর আসানসোলের সাংসদ পদ ছাড়েননি।
বাবুল সুপ্রিয়র তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর বিশ্লেষকেরা বলছেন, মন্ত্রিসভার পুনর্গঠনে ঠাঁই না পেয়ে তিনি বিজেপি ছেড়েছেন। গত ৩১ জুলাই বলেছিলেন, তিনি আর রাজনীতিতে থাকতে চান না। এবার তিনি মন দেবেন সমাজসেবায়। তাঁর কথা ছিল, রাজনীতি ছাড়াও সমাজসেবা করা যায়। তিনি এ কথাও বলেছেন, বিজেপি ছেড়ে অন্য কোনো দলে যোগ দিচ্ছেন না। তা ছাড়া অন্য কোনো দল থেকে তাঁকে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণও জানায়নি। তাই তিনি এবার সমাজসেবায় মন দিতে চান।
সেই বাবুল সুপ্রিয় আজ যোগ দিলেন তৃণমূলে। তিনি বললেন, ‘তৃণমূলে যোগ দিয়ে আমি গর্বিত। এবার দেশসেবায় কাজ করতে পারব।’ সোমবার তিনি মমতার সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর সাংসদ পদে ইস্তফা দেবেন।
৫০ বছর বয়সী বাবুল সুপ্রিয় একজন সংগীতশিল্পী, অভিনেতা, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। ২০১৪ সালে তিনি প্রথমে বর্ধমানের আসানসোল আসনে সাংসদ হন। হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও। ২০১৯ সালে আবার তিনি সাংসদ হন আসানসোল আসন থেকে।
বাবুল সুপ্রিয়র তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, বাবুল সুপ্রিয় সুবিধাবাদী রাজনীতি করছেন। পদ আর ক্ষমতার মোহে ছিলেন। তিনি একজন বিশ্বাসঘাতক। এর জবাব পাবেন তিনি। মানুষ এই বিশ্বাসঘাতকে ছাড়বে না। মানুষ এই সুবিধাবাদী রাজনীতিকদের জবাব দেবে আগামী দিনে।
অনেকে মনে করছেন, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর আসনের উপনির্বাচনের আগে বাবুল সুপ্রিয়র তৃণমূলে যোগদান বিজেপির জন্য বড় ধাক্কা। ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর আসনের উপনির্বাচন। এ আসনেই লড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াংকা টিবরেওয়াল।