ভারতের মেঘালয়ে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ও এসএমএস সার্ভিস দুই দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের বিভিন্ন এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজ্যে বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর এই কারফিউ জারি করা হলো। মেঘালয় পুলিশ টুইটে কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের ঘোষণা দেয়।
আজ শুক্রবার এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, শিলংয়ে স্থানীয় লোকজনের করা মোবাইল ফোনের ভিডিওতে দেখা গেছে, কমপক্ষে দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এলাকার প্রধান শপিং স্ট্রিট পুলিশ বাজারে এরপর হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। টুইটারে পোস্ট করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, এলাকার প্রধান দুটি সড়কে মশাল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়েছে।
শিলং থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে উইলিয়ামনগর এলাকায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার জনসভায় তাঁকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে ‘কনরাড ফেরত যাও’ স্লোগান লেখা ব্যানার নিয়ে মানুষ বিক্ষোভ করে।
মেঘালয় পুলিশ টুইটে অপপ্রচার না চালাতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
মেঘালয়ের পাশের রাজ্য আসামে বিক্ষুব্ধ জনতা ভবনে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে দুজন নিহত হয়। তবে ত্রিপুরায় বড় ধরনের সহিংস কোনো বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে।
ব্যাপক বিক্ষোভ, ধরপাকড়, হতাহতের ঘটনার মধ্য দিয়ে বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলে গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাক্ষর করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এতে বিলটি এখন আইনে পরিণত হলো।
আসাম ও ত্রিপুরার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ করে তুলে গত বুধবার রাজ্যসভায় ১২৫-৯৯ ভোটে পাস হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল। গত সোমবার বিলটি পাস হয়েছিল লোকসভায়, বুধবার পাস হয় রাজ্যসভায়। এনডিএর শরিক শিবসেনা লোকসভায় বিলের পক্ষে ভোট দিলেও রাজ্যসভায় তারা ওয়াকআউট করে। ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনে এই সংশোধনের ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে চলে আসা হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান, জৈন, পারসি ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন।