করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে ভারত। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় ঢেউ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে শিশুদের। সংক্রমণ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে মহারাষ্ট্রে সরকার ‘শিশু কোভিড সেন্টার’ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। আর শিশুদের চিকিৎসার জন্য ‘শিশু চিকিৎসা টাস্কফোর্স’ গঠন করতে চলেছে।
গতকাল রোববার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে করোনার তৃতীয় ঢেউ এবং সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ৭০০ জন সরকারি চিকিৎসকের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করেছেন।
ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্য টাস্কফোর্সের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা করোনা চিকিৎসার বিভিন্ন দিক দিয়ে আলোচনা করেছেন। স্টেরয়েড কখন এবং কতটা মাত্রায় দেওয়া জরুরি, তা জানিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ছয় মিনিট হাঁটাহাঁটির গুরুত্ব, রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা, রেমডিসিভির ইনজেকশন কখন এবং কতটা মাত্রায় দেওয়া যাবে, তা নিয়েও আলোচনা করেছেন। ভেন্টিলেটরের ক্ষেত্রে কী কী সাবধানতা নেওয়া উচিত, তাও বলেছেন চিকিৎসকেরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য শিশুদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। শিশুদের ভাইরাল ইনফেকশন, সর্দি-জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া, দুধ আর খাবার না খাওয়ার মতো উপসর্গের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারি চিকিৎসকদের মতে, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের এ ক্ষেত্রে মতামত নেওয়া জরুরি। তাঁদেরও এই লড়াইয়ে শামিল করা প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করেন।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে বলেছেন, ‘করোনার তৃতীয় ঢেউ ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য মারাত্মক হতে পারে। করোনায় আক্রান্ত শিশুদের দেখভালের জন্য আমরা শিশু কোভিড সেন্টার গঠন করছি। শিশুদের জন্য আলাদা হাসপাতাল, আইসিইউ বেড, নিয়োনেটল ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিশুদের চিকিৎসাসংক্রান্ত অন্যান্য উপকরণের প্রয়োজন আছে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই সময় শিশুদের তাদের মায়েদের সঙ্গে থাকা জরুরি। তাই সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শিশুদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে। তৃতীয় ঢেউ ছোট শিশুদের বেশি প্রভাবিত করতে পারে। কোনো শিশু করোনা পজিটিভ হলে তো সে একলা থাকতে পারবে না। মাকে তার সন্তানের সঙ্গে থাকতে হবে।
মহারাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অক্সিজেনের সংকটও অনেকটা কমেছে। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট অন্য রাজ্যগুলোকে মহারাষ্ট্রকে ‘রোল মডেল’ করার নির্দেশ দিয়েছে।
বোম্বে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (বিএমসি) বলছে, মুম্বাইতে করোনা সংক্রমণের হার ৮ শতাংশ কমে গেছে। বিএমসি বলছে, গতকাল ৩২ হাজার ৫৯০ জন পরীক্ষা করিয়েছেন। তার মধ্যে ২ হাজার ৪০৩ জন শনাক্ত হয়েছেন।