ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে হিন্দু ধর্মবিরোধী অসাম্প্রদায়িক নেতা ও অধিকারকর্মীরা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হামলার তালিকায় রয়েছেন। রাজ্যের সন্ত্রাস দমন স্কোয়াড এটিএস আদালতকে এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ শনিবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে’ কথা বলেন রাজ্যের এমন কয়েকজন নেতা ও অধিকারকর্মী হিন্দুত্ববাদী উগ্রপন্থীদের হামলার তালিকায় রয়েছেন। এর মধ্যে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা ও রাজ্যের আইন প্রণেতা জিতেন্দ্র আওহাদ, ২০১৩ সালে উগ্রপন্থীদের হাতে নিহত মহারাষ্ট্রের অধিকারকর্মী ডা. নরেন্দ্র ডাভোলকারের মেয়ে অধিকারকর্মী মুক্তা ডাভোলকার, অধ্যাপক শ্যাম মানব রয়েছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ হিন্দু উগ্রপন্থীর তথ্য তুলে ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের বিশেষ আদালতে এটিএস এ তথ্য জানায়। সে সময় এটিএস অবিনাশ পাওয়ার নামে গ্রেপ্তার হওয়া একজনের রিমান্ডের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করে।
মুম্বাইয়ের ঘাটকোপার এলাকার বাসিন্দা অবিনাশ পাওয়ারকে (৩০) ২৫ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। হিন্দু চরমপন্থী সংগঠন শ্রী শিবা প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান নামের সংগঠনের সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। শুনানি শেষে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এটিএস আদালতকে বলেছে, পাওয়ারসহ অভিযোগ ওঠা অন্য ব্যক্তিরা পুনেতে সানবার্ন সংগীত উৎসব ও ‘পদ্মাবত’ সিনেমা মুক্তি দেওয়ার সময় কর্মস্থল থেকে ছুটিতে ছিলেন।
এর আগেও রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ‘পদ্মাবত’ সিনেমা প্রদর্শন করেছে এমন দুটি প্রেক্ষাগৃহে হামলা চালিয়েছে। ‘হিন্দু সংস্কৃতিবিরোধী’ বিবেচনা করে সানবার্ন সংগীত উৎসবে হামলার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ফেসবুক ও টুইটার অ্যাকাউন্ট খুঁজেও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বেশ কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মহারাষ্ট্রজুড়ে বোমা বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গত ১০ আগস্ট সন্দেহভাজন হিন্দু উগ্রপন্থী বৈধব রাউত, শারদ কালাসকার ও সুধানভা গন্ধালেকারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর অভিনাশ পাওয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিবসেনার সাবেক সদস্য শ্রীকান্ত পাংগারকারকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ ক্রয়ে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সনাতন সংস্থার সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
অবিনাশ পাওয়ারের রিমান্ডের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌসুলি জয়সিং দেসাই বলেন, অনেকেই সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের হামলার তালিকায় রয়েছেন। তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের দৈনন্দিন সবকিছু নজরে রাখেন তাঁরা।
তবে পাওয়ারের রিমান্ড চেয়ে আবেদনের সময় তুলে ধরা বেশ কিছু বিষয়ে এটিএসকে তিরস্কার করেন আদালত।