ভারত এখন চার নম্বরে

ভারতের জাতীয় পতাকা। ছবি: এএফপি
ভারতের জাতীয় পতাকা। ছবি: এএফপি

করোনা সংক্রমণের তালিকায় এবার যুক্তরাজ্যকেও ছাপিয়ে গেল ভারত। স্পেন ও ইতালিকে টপকে পঞ্চম স্থানে উঠে আসা ভারত শুক্রবার উঠে এল চতুর্থ স্থানে। ওই তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া, দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিল, শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ছুঁতে চলেছে।

আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোয় সংক্রমণের লেখচিত্র যখন নিম্নমুখী, ভারতের বৃদ্ধির হার তখন প্রতিদিনই ঊর্ধ্বমুখী। সংক্রমণ প্রতিদিন ভেঙে দিচ্ছে আগের দিনের রেকর্ড। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী শুক্রবার সারা দেশে নতুনভাবে সংক্রমিত হয়েছেন ১০ হাজার ৯৫৬ জন। এই প্রথম দৈনিক হিসেব ১০ হাজারের গন্ডি ছাড়াল। মোট সংক্রমণের সংখ্যা ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫। ব্রিটেনের মোট সংক্রমণ ২ লাখ ৯০ হাজার ১৪৭।

শুক্রবার পর্যন্ত ভারতে করোনায় মারা গেছেন ৮ হাজার ৪৯৮ জন। মৃতদের মধ্যে ৩ হাজার ৫৯০ জন মহারাষ্ট্রে, গুজরাটে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৮৫ এবং দিল্লিতে ১ হাজার ৮৫ জন।

এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা মহারাষ্ট্র (৯৭ হাজার ৬৪৮), তামিলনাড়ু (৩৮ হাজার ৭১৬), দিল্লি (৩৪ হাজার ৬৮৭), গুজরাট (২২ হাজার ৩২) ও পশ্চিমবঙ্গ (৯ হাজার৭৬৮) নিয়ে। এই রাজ্যগুলোর পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। শুক্রবার একটি মামলায় দিল্লি সরকারকে তিরস্কার করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, এই রাজ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে পশুর চেয়েও খারাপ আচরণ করা হচ্ছে।

খারাপ আচরণের খবর অবশ্য শুধু দিল্লি নয়, অন্যান্য শহর থেকেও আসছে। দিল্লিতে এক রোগীর মৃতদেহ আবর্জনার স্তূপের মধ্যে পাওয়া গেছে। কলকাতায় এক শ্মশান চত্বরে পুরসভার গাড়িতে ১৩টি মৃতদেহ সৎকারের জন্য আনা হয়। মৃতদেহগুলো থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তখন পুরসভার কর্মীরা আঁকশি দিয়ে মৃতদেহগুলো গাড়িতে তোলেন। সেই দৃশ্য ভাইরাল হয়ে যায়।

রাজধানী–রাজ্যে যেহারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতেও সর্বোচ্চ আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, হাসপাতালে একের পর এক রোগী মারা যাচ্ছেন অথচ তাঁদের সাহায্য করার কেউ নেই। রোগের পরীক্ষাও কেন এত কম করানো হচ্ছে সে বিষয়েও রাজ্য সরকারকে জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত বলেন, চেন্নাই ও মুম্বাইয়ে দৈনিক পরীক্ষা ১৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৭ হাজার করা হচ্ছে, অথচ দিল্লিতে পরীক্ষা ৭ হাজার থেকে কমিয়ে ৫ হাজারে নামানো হয়েছে। কেন পরীক্ষা কমানো হচ্ছে তা জানতে চাওয়ার কারণও দিল্লি সরকার। রাজ্য সরকারি হিসেবেই দুদিন আগে বলা হয়েছে, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে জুলাই মাসের মধ্যে মোট সংক্রমণ সাড়ে ৫ লাখে পৌঁছে যাবে।