বিরোধীদের ক্ষোভ সামাল দিতে ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে বাংলাদেশি হিন্দুদের বাদ দেওয়া হতে পারে। যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) এমনই সুপারিশ করবে বলে অনুমান অসমিয়া গণমাধ্যমের।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও শিখদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতের পার্লামেন্টে একটি বিল আনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। বিলটি বর্তমানে রাজেন্দ্র আগরওয়ালের নেতৃত্বাধীন জেপিসির বিবেচনাধীন।
বিলটিকে ঘিরে আসামের রাজনীতি বেশ উত্তপ্ত। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পাশাপাশি চলছে উগ্রপন্থীদের হুংকার। এর মধ্যে পাঁচ বাঙালি হিন্দু খুনও হয়েছেন।
এ অবস্থায় জেপিসির সদস্য ভুবনেশ্বর কলিতার সঙ্গে কথা বলে অসমিয়া সংবাদমাধ্যম টাইমএইট জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের বাদ দিয়ে শুধু পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দুদেরই নাগরিকত্ব দেওয়ার সুপারিশ করা হতে পারে।
২০ নভেম্বর দিল্লিতে বসছে জেপিসির বৈঠক। জানা গেছে, বৈঠকের আগে সদস্যদের বক্তব্য লিখিতভাবে পেশ করতে বলা হয়েছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে দিল্লিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে আসামের ৭০টি সংগঠন। এ মাসের শেষে তারা ‘হিন্দু বাংলাদেশি’দের বিরুদ্ধে দিল্লিতে ‘সত্যাগ্রহ’ করবে বলে জানিয়েছে।
অহম ছাত্র সংস্থার (আটাসু) সভাপতি বসন্ত গগৈ গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আসামে বাংলাদেশিদের কোনো স্থান নেই।
আরেক ধাপ এগিয়ে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ বলেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের চেষ্টা হলে আসামের বিজেপি সরকারকে ব্রহ্মপুত্রের পানিতে নিক্ষেপ করা হবে।
অখিলের অভিযোগ, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পাস হলে অন্তত ১ কোটি ৯০ লাখ বাংলাদেশি হিন্দু আসামে চলে আসবে। এ কারণে অসমিয়ারা হারাবেন নিজেদের ভিটেমাটি।
অখিলের এই তথ্য মানতে নারাজ বিজেপির বিধায়ক শিলাদিত্য দেব। তিনি হিন্দুদের ভারতে আসাকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিরোধিতা করেছেন মুসলিম অনুপ্রবেশের।
বিজেপির বাইরের প্রায় প্রতিটি দলই নাগরিকত্বে জাতপাতের রাজনীতিকে গুরুত্ব না দেওয়ার পক্ষে। তারা ২৪ মার্চ ১৯৭৪-কে নাগরিকত্বের ভিত্তি বছর হিসেবে বহালের পক্ষে।