ক্যারম বোর্ড কিনতে না দেওয়ায় ভারতে শাকিল আহমেদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতের রাজস্থান রাজ্যের বরান জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভারতে এখন তাৎক্ষণিকভাবে তিন তালাকে বিবাহবিচ্ছেদ ফৌজদারি অপরাধ।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরান জেলার আনতা শহরের বাসিন্দা সবরুন্নেসা (২৪) থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ছেলের জন্য ক্যারম বোর্ড কিনতে অস্বীকৃতি জানানোয় স্বামী তাঁকে তিন তালাক দিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, সবরুন্নেসা তাঁর স্বামী শাকিল আহমেদের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সহিংসতার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে তিনি তাঁর মা–বাবার বাড়িতে থাকছেন।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মামলার শুনানির জন্য গতকাল বুধবার আদালতে হাজির হন এই দম্পতি। তাঁদের ছেলে মায়ের কাছে থেকে পড়ালেখা করছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে শাকিল আহমেদ তাঁর স্ত্রী সবরুন্নেসাকে ছেলের জন্য একটি ক্যারম বোর্ড কেনার প্রস্তাব দেন। আনতা থানার স্টেশন হাউস অফিসার রূপ সিং জানান, সবরুন্নেসা তাতে রাজি না হলে শাকিল আহমেদ ক্ষুব্ধ হয়ে তিনবার তালাক কথাটি উচ্চারণ করেন।
চলতি বছরের ৩০ জুলাই পাস হওয়া বিলটি ‘মুসলিম উইমেন (প্রোটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ) বিল’ যা ‘তিন তালাক বিল’ নামে পরিচিত। এই বিল অনুযায়ী একই সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে তিনবার ‘তালাক’ উচ্চারণ করে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে। চিঠিতে তিনবার তালাক লেখা, মুঠোফোনে তালাক বার্তা পাঠানো অথবা ফোনে বলে দেওয়া সবকিছুই অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। এভাবে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর অপরাধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিবাহবিচ্ছিন্ন নারী নিজের ও শিশুসন্তানদের ভরণপোষণের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বারস্থ হতে পারবেন। শিশুসন্তানের ভার কে পাবেন, তা ঠিক করার অধিকার থাকবে ম্যাজিস্ট্রেটের।
স্টেশন হাউস অফিসার জানিয়েছেন, শাকিল আহমেদের নামে তিন তালাক বিলের আওতায় মামলা করা হলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এ মামলায় তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
মুসলিম নারী অধিকার সংরক্ষণ আইন কার্যকর হওয়ার পর রাজস্থানের কোটা অঞ্চলে এটি তিন তালাকের পঞ্চম ঘটনা। এর আগে আগস্ট মাসে কোটা শহরের দুটি থানায় তিনটি এবং ঝালাওয়ার জেলার সুনেল থানায় তিন তালাকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।