ভারতের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বার্তা দিতে সংসদ অভিমুখে পদযাত্রা করছেন হাজারো কৃষক। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে কৃষিঋণ মওকুফ ও ফসলের ন্যায্য দামের দাবিতে দুই দিনের প্রতিরোধ কর্মসূচি শুরু করেছে তারা। পাঁচটি বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৫ কিলোমিটার হেঁটে রামলীলা ময়দানের দিকে আসছেন তাঁরা।
আজ শুক্রবার কৃষক নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর তাদের কয়েকটি শর্তে পদযাত্রার অনুমতি দেয় দিল্লি পুলিশ। তবে তারা সংসদ পর্যন্ত যেতে পারেননি। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, প্রায় ৩৫ হাজার কৃষক সংসদ পার্লামেন্ট স্ট্রিট পুলিশ স্টেশনের কাছে জড়ো হয়েছেন। কৃষকনেতারা তাঁদের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন।
ভারতের এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজধানীতে গিয়ে নিজেদের দাবিগুলো জানানোর আশায় কয়েক হাজার কৃষক বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এসে জড়ো হয়েছেন। বিশাল মিছিলকে সমর্থন জানিয়েছে বামসহ দেশের বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন। বিশেষ নিরাপত্তার জন্য সংসদ ভবন চত্বরে পুলিশের ৩ হাজার ৫০০ সদস্য মোতায়েন করেছে দিল্লি পুলিশ।
কৃষকেরা এসেছেন উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্র প্রদেশ ও গুজরাট থেকে। কৃষকেরা চাইছেন তাঁদের সমস্যা নিয়ে সংসদে ২১ দিনের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক। বিক্ষোভকারী কৃষকদের এক ছাতার তলায় এনেছে অল ইন্ডিয়া কিষান সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটি।
দাবি করা হচ্ছে, কেন্দ্র কৃষকদের সমস্যা সমাধানে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। মোদি সরকার কৃষকদের জন্য কী করছে তা স্পষ্ট করে জানানো হোক।
এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, রামলীলা ময়দানের রং সম্পূর্ণ লাল হয়ে গিয়েছিল গতকাল। কয়েক হাজার লাল পতাকায় ভরে গিয়েছিল বিশাল রামলীলা ময়দান। স্লোগান ওঠে, 'অযোধ্যা নাহি, করজি মাফ চাহিয়ে'। ১২০০ জন কৃষক তামিলনাড়ু থেকে গতকাল সকালে দিল্লি এসে পৌঁছলেন দুটি খুলি নিয়ে। ওই খুলি দুটি তাদেরই সতীর্থ দুই কৃষকের। যাঁরা ঋণ মেটাতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
দিল্লিতে সর্বশেষ কৃষক বিক্ষোভ হয়েছিল ২ অক্টোবর। সেই সময় ব্যারিকেড, জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছিল। এবারে অন্তত তেমন কিছু হবে না বলেই আশা করছেন কৃষকনেতারা। দিল্লির পাঁচটি গুরুদ্বার বহু কৃষককে রাতে থাকার জন্য স্থান দিয়েছে। বেশির ভাগ কৃষকই রামলীলা ময়দানে তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটান। আম আদমি পার্টি খাবার দিচ্ছে কৃষকদের।