ডলার ও পাউন্ডের বিপরীতে রুপির দাম কমে যাওয়ায় বিপদে পড়েছেন ভারত থেকে বিদেশে পড়তে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থী। তাঁরা লেখাপড়ার খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পড়তে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থী এ সমস্যায় পড়ছেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
জামান রানা নামের এক শিক্ষার্থী গত বছর কেমব্রিজের অ্যানজিলা রাসকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরেনসিক সায়েন্সে পড়তে যান। সেখানে গাড়ি কেনার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ পাউন্ডের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এখন তাঁকে পাশের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতে হচ্ছে।
মনোজ গুপ্তর ছেলে আরাকানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে পড়তে গেছেন এ বছরের গ্রীষ্মে। হঠাৎ করেই তাঁর জন্য বেশি অর্থ পাঠাতে হচ্ছে।
গুপ্ত বলেন, বছরে ৩০ হাজার ডলার পাঠানোর কথা। ভর্তির সময় ডলারের দাম ছিল ৬৪ রুপি। কিন্তু এখন তা ৭৬ রুপি হয়ে গেছে। খরচ বেড়ে গেছে বহু গুণ।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ভারত থেকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পড়তে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়েছেন। অনেক পরিবারকে বাড়তি অর্থ পাঠাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ডলারের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ফলে বিদেশে লেখাপড়ার খরচ আরও ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকেরা। ইতিমধ্যে গত তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে এমবিএ পড়তে খরচ পাঁচ লাখ রুপি বেশি বেড়েছে। স্নাতক পর্যায়ে বেড়েছে আড়াই থেকে তিন লাখ রুপি।
গত এক বছরে ভারতে পাউন্ডের দাম ৮৫ দশমিক ৫ থেকে ৯৭ দশমিক ৬ রুপিতে পৌঁছেছে। ডলারের দাম ৬৫ দশমিক ২ থেকে ৭৪ দশমিক ২ রুপিতে গেছে আর ইউরোর দাম ৭৬ দশমিক ৩ থেকে ৮৪ দশমিক ৮ রুপিতে পৌঁছেছে।
পশ্চিমা মুদ্রার তুলনায় রুপির দাম যদি পড়তে থাকে, তবে ভারতীয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের পরিবর্তে অন্যান্য ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে পড়াশোনা করতে যাবেন। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, হংকং অন্যতম।
শিক্ষা পরামর্শকেরা বলছেন, ভারতে রুপির দামের পতন সাময়িক। তবে এটা দীর্ঘমেয়াদি হলে ভারতের শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার আগ্রহ কমিয়ে দেবে।
এর মধ্যে যেসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ৫০ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করেছেন, তাঁরা খরচ শিথিল করার জন্য আবেদন করেছেন।