ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে অন্তর্হিত চার কংগ্রেস বিধায়কের একজন রাজ্য বিধানসভার স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। তাঁর নাম হারদীপ ড্যাং। স্পিকার এনপি প্রজাপতিকে তিনি লিখেছেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো জনসমর্থন নিয়ে এমএলএ নির্বাচিত হলেও তাঁর দল ক্রমাগত তাঁকে অবহেলা করেছে। দুর্নীতিবাজ সরকারের অংশ হওয়ায় কোনো মন্ত্রী কাজ করতে রাজি নন।’
গত মঙ্গলবার ভারতের মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকার পতনের প্রচেষ্টা হিসেবে বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের ১০ বিধায়ককে ভাগানোর অভিযোগ ওঠে। কংগ্রেস জানিয়েছে, তাদের ৬ সদস্যকে দিল্লির গুরগাঁওয়ের একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে মধ্যরাতে উদ্ধার করা হয়েছে।
এখনো হারদীপ ড্যাং, রঘুরাজ কাঞ্চনা, বিশুলাল সিং ও স্বতন্ত্র সদস্য শেরা ভাইয়ার খোঁজ পাওয়া যায়নি। গুঞ্জন রয়েছে, বিজেপিশাসিত কর্ণাটকের একটি পাঁচ তারকা হোটেল তাঁদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বলেছেন, ‘হারদীপের পদত্যাগের তথ্য জানতে পেরেছি। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কোনো চিঠি পাইনি বা এ বিষয়ে আলাপ হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা পর্যন্ত এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
কমল নাথের সরকার বিধানসভায় ১২০ বিধায়ক নিয়ে টিকে রয়েছে। সরকার টেকাতে হলে ২৩০ আসন বিশিষ্ট রাজ্যসভায় ১১৬ আসন থাকা বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে কংগ্রেসের বিধায়ক ১১৪, দুজন বিএসপি, একজন সমাজবাদী পার্টির ও চারজন স্বতন্ত্র বিধায়ক। রাজ্যসভায় বিজেপির রয়েছে ১০৭ আসন। ২টি আসন এখন শূন্য।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্য তিন নিখোঁজ বিধায়ক যদি পদত্যাগ করেন তবে এটি বিধানসভায় সংখ্যাটি ২২৪ এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের সংখ্যা ১১৩ এ নামিয়ে আনবে।
জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা দ্বিগবিজয় সিং এ সপ্তাহের শুরুতেই এমন ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, বিধায়কদের ভাগাতে বিজেপি থেকে বিধায়কদের ২৫ থেকে ৩০ কোটি রুপির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।
কংগ্রেস বলছে, তাদের সরকার নিরাপদ জেনে বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিবছরই রাজ্যসভায় আসন বাড়াতে এমন প্রচেষ্টা চালানো হয়।
কংগ্রেসের আরেক নেতা রনদীপ সিং দাবি করেছেন, বিজেপি ১৪ বিধায়ককে ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কংগ্রেস সরকার ভূমিদস্যু, চিট ফান্ড মাফিয়া, চাঁদাবাজি বন্ধ করেছে। এসব কাজ ১৫ বছর ধরে চালিয়ে আসছে বিজেপি। তারা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে, কারণ বিজেপির বিধায়কেরা ভাবছেন, শিগগিরই তাদের জেলখানায় থাকতে হবে।
বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা নরোত্তম মিশ্র বলেছেন, তাঁদের ভাবা উচিত কেন মানুষ তাঁদের ওপর এত রেগে আছে এবং কেন তাঁদের সঙ্গে থাকতে চাইছে না।