লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলে তিন দিনের মাথায় বন্ধ হলো বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলসীমান্তে আমদানি–রপ্তানি। করোনা সংক্রমণ চলছে—সীমান্তের একদল শ্রমিক এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার বন্ধ হলো দুই দেশের বাণিজ্য।
বেনাপোল-পেট্রাপোল পথে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। এ সীমান্ত পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমায়। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা এখনো করোনা–আক্রান্তের লাল জোন হিসেবে চিহ্নিত। তাই এই মুহূর্তে এই স্থলসীমান্ত পথে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য শুরু করার বিপক্ষে অবস্থান নেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তাঁদের ভয়ের কারণ হলো, এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পণ্য পরিবহনের প্রধান বাহন ট্রাক বা লরি । পণ্যবোঝাই এসব ট্রাক আসে সাধারণত ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পণ্যও আসে এই পথে। সেখানকার ট্রাকের চালক ও খালাসিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন। স্থানীয় লোকজনের প্রশ্ন, ট্রাকচালক, খালাসি ও শ্রমিকেরা যে করোনাভাইরাস বহন করছেন না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? এসব কারণে সীমান্তের একদল শ্রমিক এবং ট্রাকচালকেরা আপত্তি তুলে দাবি তোলেন এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বন্ধের।
সেই লক্ষ্য নিয়ে আজ রোববার বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত পথের জয়ন্তীপুরে স্থানীয় লোকজন সড়ক অবরোধ করে দাবি তোলেন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এই সীমান্ত বাণিজ্য। একপর্যায়ে তাঁরা জয়ন্তীপুরের অবরোধ স্থানে আটকে দেন বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে কর্মরত কর্মকর্তাদের গাড়ি। এই অবরোধ ৪০ মিনিট ধরে চলে । অবশেষে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয় সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধের। যদিও এই সীমান্ত বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার দুদেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি-রপ্তানি করার জন্য অনুমতি দিয়েছিল। সেই লক্ষ্যে খুলেও যায় পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থলসীমান্ত।
যদিও লকডাউনে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার পর দুদেশের আমদানি-রপ্তানিকারকেরা আমদানি–রপ্তানি শুরু করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সমস্যা দাঁড়ায় লকডাউনের কারণে দুদেশের পণ্যবাহী ট্রাক কোথায় এসে পণ্য খালাস ও উত্তোলন করবে। যদিও এত দিন এই আমাদানি-রপ্তানি পণ্য উভয় দেশের পেট্রাপোল ও বেনাপোল সীমান্তের পার্কিং জোনে ওঠানো-নামানো হতো । লকডাউনের আগে সেখানে নামানো হতো উভয় দেশের আমাদানি-রপ্তানির পণ্য। তারপর স্ব স্ব দেশে ফিরে আসত পণ্যবাহী ট্রাক। কিন্তু করোনার কারণে দুদেশের পণ্যবাহী ট্রাকের পার্কিং জোনে বন্ধ হয়ে যায় পণ্য নামানো–ওঠানোর কাজ। এ কাজের স্থান নির্ধারণ করা হয় দুই দেশের জিরো পয়েন্টে বা নো-ম্যানস ল্যান্ডে। অর্থ্যাৎ ট্রাক টু ট্রাক লোড এবং আনলোড।