হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের উত্তরসূরি বেছে নিতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত সরকার। ইতিমধ্যে সুপারিশ করা কিছু নাম গণমাধ্যমে এসেছে। খুব দ্রুতই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে সুপারিশ করা এ নামের তালিকা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এ তথ্য জানিয়েছে।
৮ ডিসেম্বর হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ভারতীয় প্রতিরক্ষাপ্রধান বিপিন রাওয়াত নিহত হন। ওই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী মাধুলিকা এবং সশস্ত্র বাহিনীর আরও ১১ জন সদস্যও প্রাণ হারান। হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ওই ঘটনায় একমাত্র গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে গত বুধবার তিনিও মারা গেছেন।
বিপিন রাওয়াত নিহত হওয়ার পর ভারতের প্রতিরক্ষাপ্রধানের পদটি এখন শূন্য। এ শূন্য পদে কাকে নিয়োগ দেওয়া যায়, তা নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত সরকার। বিপিনের উত্তরসূরি বাছাইয়ের জন্য একটি নিয়োগ প্যানেল চূড়ান্ত করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদের সমন্বয়ে এ প্যানেল গঠন করা হচ্ছে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা বলেছেন, তিন বাহিনীর সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুতই তালিকাটি অনুমোদনের জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে পাঠানো হবে। এরপর নতুন প্রতিরক্ষাপ্রধান নিয়োগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে তালিকাটি মন্ত্রিপরিষদের নিয়োগ কমিটির কাছে পাঠানো হবে।
প্রতিরক্ষাপ্রধান হিসেবে নিয়োগে এগিয়ে যাঁরা
গুঞ্জন রয়েছে, ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে প্রতিরক্ষাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন। তাঁর সার্বিক অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে তাঁকে এ পদে আসীন করা হতে পারে। তিন বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে নারাভানে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ। আগামী এপ্রিলে তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ভারতের বর্তমান বিমানবাহিনীর প্রধান চিফ মার্শাল ভি আর চৌধুরী গত ৩০ সেপ্টেম্বর এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল হরি কুমার ৩০ নভেম্বর দায়িত্ব পেয়েছেন।
এখন নারাভানেকে প্রতিরক্ষাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও, তাঁর শূন্য পদে কাকে স্থলাভিষিক্ত করা হবে, তা-ও ঠিক করতে হবে সরকারকে।
সেনাবাহিনীর উপপ্রধান লে. জে. সি পি মোহন্তি এবং সেনাবাহিনীর নর্দার্ন কমান্ডের কমান্ডার লে. জে. ওয়াই কে জোশি সেনাপ্রধান হওয়ার সম্ভাবনায় এগিয়ে রয়েছেন। তাঁরা দুজন একই ব্যাচের। দুজনই নারাভানের পর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কমান্ডার। এ দুই কর্মকর্তারই আগামী ৩১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
২০২০ সালের ১ জানুয়ারি ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কাজের মধ্যে সমন্বয় আনা এবং সার্বিকভাবে সামরিক শক্তিকে জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে পদটি সৃষ্টি করা হয়েছিল। প্রতিরক্ষাপ্রধান একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামরিক বিভাগের সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখ্য উপদেষ্টাও তিনি।