পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট গ্রহণ হওয়া ৩০ আসনের মধ্যে ২৬ আসনে বিজেপি জিতবে বলে দাবি করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা অমিত শাহ। তাঁর এই দাবির পর তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে বাকি চারটি আসন কার?
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রাজ্যের ৫ জেলার ৩০টি আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে গতকাল শনিবার। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদে নির্বাচন ছিল অনেকটাই শান্তিপূর্ণ।
দিল্লিতে নিজ বাসভবনে আজ রোববার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, গতকাল বাংলায় যে ৩০টি আসনে নির্বাচন হয়েছে, তাতে বিজেপি ২৬টি আসনে জিততে চলেছে। আর বিজেপি এবার ২০০-এর বেশি আসন পেয়ে বাংলায় ক্ষমতায় আসবে। বিজেপির এই নেতা আরও বলেন, এবার নন্দীগ্রামে পরিবর্তন এলেই এই বাংলায় পরিবর্তন আসবে। বাংলায় এবার সরকার গড়বে বিজেপি। হবে বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার। সোনার বাংলা।
অমিত শাহর এই বক্তব্যের জবাব দিতে দেরি করেননি মমতা। কলকাতায় তৃণমূলের এই নেত্রী আরও বলেন, ‘তবে বাকি চারটি আসন কার জন্য রেখেছেন অমিত শাহ? কংগ্রেস ও সিপিএমের জন্য?’ মমতা বলেন, ‘গতকালকের ভোটে মানুষ ব্যাপক সাড়া দিয়েছে। এতে প্রমাণ হয়েছে এবার প্রচুর ভোট পড়েছে। জঙ্গলমহলের মা-বোনেরা এক জোট হয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। তাই বলছি এবার তৃণমূলই জিততে চলেছে।
অমিত শাহর স্বপ্ন সফল হবে না এই বাংলায়। এই বাংলায় এবারও ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল।’
মমতা নন্দীগ্রামের পাশের আসন চণ্ডীপুরে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেতা সোহমের পক্ষে প্রচারে অংশ নেন আজ। সেখানে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ আমার দেহে প্রাণ থাকবে, ততক্ষণ আমি বিজেপি ও সিপিএমকে ক্ষমা করব না। ওরা জগাই-মাধাই-গদাই। আজ ওরা এক জোট হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল একাই এক শ। আমার বিরুদ্ধে এক হাজার গুন্ডা বাইরে থেকে নিয়ে এসে বসিয়ে রেখেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওরা উত্তর প্রদেশ থেকে বন্দুকধারী গুন্ডা ঢুকিয়ে ভোট করাতে চাইছে। ওদের কথায় চলছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী। আমরা ওদের খাওয়া-থাকার ব্যবস্থা করছি আর ওরা আমাদের ভোটারদের মারধর করছে। আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সম্মান করি। কিন্তু মনে রাখবেন, উত্তর প্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথের স্টাইলে এখানে ভোট করা চলবে না। মানুষ জবাব দেবে। তাই বলছি ২ মে দেখুন আমরাই আসছি এই বাংলায় ফের ক্ষমতায়। বিজেপি পারবে না। তৃণমূলই সরকার গড়বে।’
আগামী ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ৩০ আসনে নির্বাচন হবে। এই দফায় পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম আসনেও ভোট গ্রহণ করা হবে। এই আসনের তৃণমূলের প্রার্থী দলনেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। দুজনই এবার নন্দীগ্রামে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
এদিকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে প্রচারের জন্য আজ মমতার নন্দীগ্রামে যাওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।