পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র লাঞ্ছনার ঘটনায় আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও এর কাছের এলাকায় পাল্টাপাল্টি মিছিল হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিজেপি–সমর্থিত ছাত্রসংগঠন অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) নবীনবরণ উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন সংগীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়। এ সময় এবিভিপির সমর্থকেরাও ব্যাপক ভাঙচুর চালান।
সেই ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুরে এবিভিপির ডাকে মন্ত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে এক বিরাট প্রতিবাদ মিছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাত্রা করে। মিছিলে যোগ দেয় প্রচুর মানুষ। মিছিল শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে গোলপার্ক থেকে। দুপুরে শুরু হওয়া এই মিছিল যোধপুর পার্ক ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওনা দিলে মিছিলটি পুলিশ আটকে দেয়। রাস্তায় বড় বড় লোহার ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকায় পুলিশ।
এবিভিপির কর্মী–সমর্থকেরা ওই ব্যারিকেড ভেঙে বিশ্ববিদ্যলয়ের দিকে রওনা হতে চাইলে সেই ব্যারিকেড ভাঙতে না পেরে এবিভিপির সমর্থকেরা প্রথম দিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। একপর্যায়ে পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় পুলিশ বারবার মাইকে মিছিলকারীদের শান্ত থাকার কথা বলে, নইলে পুলিশ এই মিছিলকে অবৈধ ঘোষণা করবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়। পুলিশও এ সময় নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য মিছিলকারীদের ওপর মৃদু লাঠিচার্জ করে। এতে ৭ জন ছাত্র আহত হয়েছেন বলে এবিভিপি দাবি করেছে। অন্যদিকে এবিভিপির ছোড়া ইটপাটকেলে একজন মহিলা পুলিশ আহত হন।
এবিভিপির সমর্থকেরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙতে না পেরে বসে পড়েন রাস্তায়। তাঁরা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি তোলেন।
অন্যদিকে এবিভিপির মিছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে আগেই সিপিএমের ছাত্রসংগঠন এসএফআই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রসংগঠন ঘোষণা দিয়েছিল। সেই লক্ষ্যে দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর ফটকে মানবপ্রাচীর গড়ে তোলেন এসএফআই, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। এতে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও। তাঁরা ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বহিরাগতকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ঢুকতে দেওয়া হবে না এবিভিপিকেও। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের লাঞ্ছিত করার জন্য মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তাঁরা। ফলে পুলিশি বাধার মুখে আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।