বাংলাদেশে গায়ের জোরে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত ও মন্দির দখল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাংসদ সুব্রামাণিয়াম স্বামী। এটা বন্ধ না হলে বাংলাদেশ দখল করার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
রোববার সকালে আগরতলায় ত্রিপুরা সরকারের সরকারি অতিথিশালায় সংবাদ সম্মেলনে সুব্রামাণিয়াম এ কথা বলেন। তাঁর সাফ কথা, ‘শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু মুসলিমদের হিন্দুদের গায়ের জোরে ধর্মান্তকরণ ও মন্দির ভাঙার তাণ্ডব বন্ধ করতে হবে।’ সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ‘হিন্দুদের বিরুদ্ধে পাগলামি বন্ধ না হলে বাংলাদেশ দখল করতে হবে। আমি সরকারকে সেই পরামর্শই দেব।’
শুধু বাংলাদেশ নয়, এদিন পাকিস্তানের সঙ্গেও যুদ্ধের দামামা বাজানোর চেষ্টা করেন ভারতীয় রাজ্যসভার এই প্রবীণ সদস্য। তিনি পাকিস্তানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ‘চাপরাসি’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, ‘ইমরান বা অন্য কেউ নামেই প্রধানমন্ত্রী। আসলে সবাই সেনাবাহিনী বা আইএসআইয়ের চাপরাসি।’ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে শুধু চাপরাসি বলেই থেমে থাকেননি তিনি। বললেন, পাকিস্তানকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দিতে হবে। আগে তো দুভাগ হয়েছে। এবার চার ভাগ করতে হবে। বালুচি, সিন্ধি, পোকতোনি ও পাকিস্তানকে আলাদা করে দিতে হবে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়েও এদিন ফের বিতর্কিত মন্তব্য শোনা যায় সুব্রামাণিয়ামের মুখে। বললেন, জিনিসপত্রের দাবি বা অর্থনীতি দিয়ে ভোট হয় না। হিন্দুত্ব আর দুর্নীতিই হবে ভোটের মূল ইস্যু। এটাকে কাজে লাগিয়েই জিতবে বিজেপি। বাড়বে আসনও। হিন্দুত্বের প্রশ্নে এদিন তিনি ফের দাবি করেন, ভারতের তিন হিন্দু মন্দির পুনরুদ্ধার করতে হবে। অযোধ্যার রামমন্দির, কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির ও মথুরার কৃষ্ণ মন্দিরের কথা বলেন তিনি। তাঁর মতে, ‘এই তিন মন্দিরসহ ৪০ হাজার মন্দির মুসলিম আগ্রাসনের সময় ধ্বংস হয়েছে। তবে তিনটি মন্দির মুসলিমরা স্বেচ্ছায় দিলে বাকি সব মন্দির ছেড়ে দিতে আমরা প্রস্তুত। না হলে সবই আমরা দখল করে নেব। এটাই হলো হিন্দুদের শ্রীকৃষ্ণ প্যাকেজ।’
এদিন ফের কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে ‘জালিয়াত’ বলে উল্লেখ করেন সুব্রামাণিয়াম। সোনিয়া গান্ধীকে দুর্নীতির দায়ে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় জেলে পাঠানোরও হুমকি দেন তিনি। তবে রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে ভারতীয় রাজনীতি তোলপাড় হলেও তিনি বিষয়টি জানেন না বলে এড়িয়ে যান। ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রাম প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সুব্রামাণিয়াম মন্তব্য করেন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে স্তালিন খুন করিয়েছিলেন। বিজেপির সাংসদ হয়েও এদিন তাঁর মুখে শোনা গেছে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির বিরূপ সমালোচনা।