ভারতের উত্তর প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী কিশোরীর (১৬) বাবা পুলিশ হেফাজতে মারা গেছেন। বিধায়ক কুলদীপ সিং সেনগার ও তাঁর ভাই বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রোববার ওই কিশোরী (১৬) মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, কিশোরীর বাবা রোববার পেটে ব্যথা অনুভব করলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার তিনি মারা যান। অভিযোগ রয়েছে, গত সপ্তাহে বিধায়ক কুলদীপ সিং ও তাঁর লোকজন ওই কিশোরীর বাবাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম জখম করে। পরে তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এনে পুলিশে দেওয়া হয়।
এদিকে এই মৃত্যুর ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত চার পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা গ্রেপ্তারের পর ওই ব্যক্তিকে পিটিয়েছেন।
এর আগে রোববার এনটিভির খবরে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ওই কিশোরী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ওই কিশোরীর অভিযোগ, রাজ্য ক্ষমতাসীন বিজেপির বিধায়ক ও তাঁর সঙ্গীরা মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করেছেন। এর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ওই নারী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। তবে ওই বিধায়ক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নির্যাতিত কিশোরী ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বিজেপির বিধায়ক কুলদীপ সিং সেনগার ও তাঁর ভাই গত বছরের জুনে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এরপর তাঁরা থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। থানায় অভিযোগ দেওয়ায় পর তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিচারের আশায় তিনি এক বছর ধরে ঘুরছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথের বাড়ির সামনে তাঁরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
বার্তা সংস্থা এএনআইকে ওই কিশোরী বলেন, ‘আমি ধর্ষণের শিকারের পর এক বছর ধরে অনেকের কাছে গেছি। কিন্তু কেউ আমার কথা আমলে নেননি। সবাই গ্রেপ্তার না হলে আমি আত্মহত্যার পথ বেছে নেব। আমি মুখ্যমন্ত্রী আদিত্য নাথের কাছেও গিয়েছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। আমরা থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর হুমকি দেওয়া হয়েছে।’
কুলদীপ সিং সেনগার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার প্রতি তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। তাঁরা নিম্নস্তরের মানুষ। আমাকে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে সম্মানহানি করতে চেষ্টা করেছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা রাজীব কৃষ্ণ বলেন, কুলদীপ সিং সেনগারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ওই কিশোরী। তদন্তের পরে জানা গেছে, ১০-১২ বছর ধরে ওই পরিবারর সঙ্গে কুলদীপের বিবাদ চলছিল। মামলাটি লক্ষ্ণৌ আদালতে পাঠানো হয়েছে।