প্রথম দফায়ই পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষ হলেও এখনো পুনর্নির্বাচন নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে। বাম ও ডান উভয় পক্ষই ফের ভোটের জন্য প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন বিষয়টি পরীক্ষাধীন বলে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
উত্তর-পূর্ব ভারতের আট রাজ্যের ২৫টি লোকসভা আসনেরই ভোট গ্রহণ পর্ব শেষ। ভোট গণনা আগামী ২৩ মে। ১১ এপ্রিল শুরু হয় প্রথম দফার ভোট। এই অঞ্চলে শেষ দফার ভোট ছিল ২৩ এপ্রিল। কিন্তু এখনো রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। কারণ, পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বী সব পক্ষই ধরে নিয়েছেন, ফের কিছু বুথে ভোট হবে।
১১ এপ্রিল ভোটের দিন ব্যাপক কারচুপি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ করে বিরোধী দল সিপিএম ও কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে শাসক দল।
এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী শঙ্কর প্রসাদ দত্ত দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে এই কেন্দ্রের ১ হাজার ৬৭৯ বুথের মধ্যে ৮৬৪টিতে পুনরায় ভোট চেয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, পেশিশক্তির সাহায্যে শাসক দল বিরোধীদের এজেন্ট দিতেই দেয়নি।
এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে শঙ্কর প্রসাদ দত্ত বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে বিজেপি। রাজ্যে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে ফের ভোট করা এখন নির্বাচন কমিশনের একমাত্র কর্তব্য।
কংগ্রেস প্রার্থী সুবল ভৌমিকও প্রথম আলোর কাছে ব্যাপক কারচুপি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ফের ভোট না হলে কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক শ্রীরাম তরণীকান্ত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাঁরা পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনের পাশাপাশি নির্বাচনী বুথের ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করছেন। নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক বিনোদ জুতসিও ত্রিপুরায় সবকিছু খতিয়ে দেখতে এসেছেন।
জানা গেছে, পশ্চিম ত্রিপুরার রিটার্নিং কর্মকর্তা সন্দীপ মোহান্তও তাঁর প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি বুথে অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে ভোট গ্রহণের পর ১৬ দিন হয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। শাসক দল বিজেপিও নিশ্চিত, কিছু বুথে ফের ভোট হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে পশ্চিম ত্রিপুরা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রতিমা ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু বুথে ফের ভোট হবে, এটা আমরাও বুঝতে পারছি। তবে সেটা কমিশন দ্রুত জানাক। আমরা প্রস্তুত।’
একই সঙ্গে কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে দেরি করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রতিমা। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতিমা জানান, পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে ভোট প্রচারে যাওয়ার কথা তাঁর। কিন্তু নিজের কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণ ঝুলে থাকায় তিনি যেতে পারছেন না সেখানে।
শুধু প্রতিমাই নন, গোটা রাজ্যই কৌতূহলের সঙ্গে তাকিয়ে আছে নির্বাচন কমিশনের দিকে। এখন দেখার বিষয় কমিশন কবে এবং কী সিদ্ধান্ত নেয়।