ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরে দুই ছাত্র নিহত হওয়ার প্রতিবাদে রাজ্যের রাজনীতি অশান্ত হয়ে পড়েছে। এই ইসলামপুরের দাঁড়িভিট উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে আন্দোলনের মুখে গুলিতে দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং পুলিশের অত্যাচার বন্ধ ও দোষী পুলিশের শাস্তির দাবিতে এই বনধ ডাকা হয়েছে। কংগ্রেস দুই ছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ কলকাতায় মোমবাতি মিছিল বের করছে।
গত বৃহস্পতিবার দুই ছাত্র তাপস বর্মণ ও রাজেশ সরকার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। ছাত্ররা দাবি করেছে পুলিশের গুলিতে মারা যায় ওই দুই ছাত্র, তারা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। কিন্তু পুলিশ বলেছে, বহিরাগতদের গুলিতে মারা যায় এই দুই ছাত্র। কিন্তু গ্রামবাসী তা মানছে না। তারা বলেছে পুলিশের গুলিতে মারা গেছে ওই দুই ছাত্র।
আজ শনিবার ইসলামপুর মহকুমাজুড়ে ছাত্রছাত্রীরা ধর্মঘটে শামিল হয়। সকালে দাঁড়িভিটে নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলের নেতা বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী এবং শিলিগুড়ি পৌরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্যসহ একদল বাম প্রতিনিধি। তারা এই ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেন। এ সময় এলাকাবাসীরা দাবি তোলে অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। বাম প্রতিনিধিদল নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এবং স্কুলেও যায়।
এদিকে নিহত দুই ছাত্রের সৎকার করতে দেননি এলাকাবাসী। তাঁরা নিহত দুই ছাত্রের দেহ নদীর তীরে মাটিচাপা দিয়ে রেখেছেন। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, এই দেহ এখান থেকে গায়েব করতে পারে তৃণমূল। তাই এখন পালা করে দেহ দুটি পাহারা দিচ্ছেন এলাকার মানুষজন।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার রাজ্যজুড়ে অবরোধ বিক্ষোভে শামিল হয় বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। তারা রাজ্যের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে। অবরোধ হয় আজ বনগাঁ, বারাসাত, অশোকনগর, সোনারপুর, ইটাহার, রায়গঞ্জসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল বের করে তারা। অবরোধকালীন পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় অবরোধকারীদের।
এদিকে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই অবরোধ করে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরে। আজ উত্তর দিনাজপুরে বিভিন্ন সংগঠনের ডাকে ছাত্র ধর্মঘট হয় জেলার বিভিন্ন স্কুলে।