পশ্চিমবঙ্গে গরু পাচারের মূল সন্দেহভাজন এনামুল গ্রেপ্তার

ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)
 ছবি: টুইটার

গরু পাচারের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন মুর্শিদাবাদের এনামুল হককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। শনিবার দিল্লি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউর আদালতে তোলা হলে আদালত তাঁকে ৭ দিনের ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

গরু পাচার–কাণ্ডে ২০২০ সালে এনামুলকে গ্রেপ্তার করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। দুই বছর কারাভোগের পর জানুয়ারির শেষ দিকে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান এনামুল। তবে গরু পাচারের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইডি। ওই মামলায় শনিবার আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো।

এনামুলের কাছ থেকে ইডি একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে। ওই ডায়েরিতে এনামুলের সঙ্গে কারা আর্থিক লেনদেন করেছেন, সেসব তথ্য পেয়েছে ইডি। এখন ইডি এনামুলকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাইছে কারা গরু পাচারের অর্থের ভাগ পেয়েছে। ইতিমধ্যে সাতজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই।
এদিকে আবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও অভিনেতা দেবের সহপ্রযোজক পিন্টু মণ্ডলকে তলব করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের কলকাতা দপ্তর নিজাম প্যালেসে হাজির হতে বলা হয়েছে তাঁকে। গরু পাচারের অর্থ চলচ্চিত্রে বিনিয়োগের অভিযোগে পিন্টু মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে সিবিআই।
এর আগে অভিনেতা দেবকে গরু পাচার নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে সিবিআই। ১৫ ফেব্রুয়ারি সিবিআই দপ্তরে উপস্থিত হয়ে তাদের প্রশ্নের জবাব দেন দেব।

সেখানে সিবিআই কর্মকর্তারা দেবকে পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। এর আগে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সীমান্তে গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত হিসেবে দেশটির তদন্ত সংস্থাগুলোর মূল সন্দেহভাজন এনামুল হক। দেবের কাছেও সিবিআই কর্মকর্তারা মুর্শিদাবাদের তৃণমূল যুব সংগঠনের নেতা এনামুল হক সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। এনামুলের সঙ্গে ব্যক্তিগত বা আর্থিক সম্পর্কের কথাও জানতে চাওয়া হয়।

দেব সিবিআই কর্মকর্তাদের বলেছেন, তিনি এনামুলকে চেনেন না। সুতরাং তাঁর সঙ্গে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নেওয়া বা এর সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনো প্রশ্নই নেই।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের অর্থ নিয়মিত ভাগ হয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), পুলিশ ও সীমান্তের এক গরু পাচার চক্রের হোতা ও নেতাদের মধ্যে। গরু পাচারের অর্থের ভাগ পান নেতা থেকে পুলিশ ও বিএসএফ কর্মকর্তারা। অভিযোগ, এই গরু পাচার চক্রের মূল হোতা হলেন এনামুল হক।

গরু পাচার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে এনামুল হকসহ অনেকের নামে সিবিআই মামলা করে। এরপর দিল্লি থেকে এনামুলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। পরে এনামুল আসানসোলে সিবিআই বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে গত মাসের শেষ দিকে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি।