ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এক রাতে দুই দম্পতি খুন হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার কলকাতার দক্ষিণাঞ্চলের নেতাজিনগরে এক বৃদ্ধ দম্পতির এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার নরেন্দ্রপুরে বাড়ির বাথরুম থেকে সুটকেসবন্দী অপর এক দম্পতির লাশ উদ্ধার করা হয়।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম সিপি (অপরাধ) মুরলীধর শর্মা জানান, নেতাজিনগরের বাঁশদ্রোণী বাজারের কাছে পাঁচ কাঠা জায়গার ওপর দ্বিতল এক বাড়িতে থাকতেন নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতি ৭৫ বছরের দিলীপ মুখোপাধ্যায় ও পঞ্চাশোর্ধ্ব স্বপ্না মুখোপাধ্যায়। গতকাল সকালে রংমিস্ত্রি হরি তাঁদের বাড়িতে গিয়ে প্রবেশদ্বারের সামনে স্বপ্নাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁর নাক দিয়ে তখনো রক্ত বের হচ্ছিল। গলায় দড়ি প্যাঁচানো ছিল। গলার মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল একটি নল।
হরি প্রতিবেশী ও পুলিশে খবর দিলে নেতাজিনগর থানার পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে দোতলার শোয়ার ঘর থেকে দিলীপের লাশ উদ্ধার করে। তাঁর মুখে বালিশচাপা দেওয়া ছিল। মুরলীধর বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, শ্বাসরোধে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার রাতে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে বাড়িতে একজন বা দুজন বহিরাগতের উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। পুরো ঘর লন্ডভন্ড করে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। আমাদের ফরেনসিক দল এখনো কাজ করছে।’
কী কারণে এই বৃদ্ধ দম্পতিকে খুন করা হতে পারে, তদন্ত করছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
স্বপ্নাদের বাড়ির সাবেক এক পরিচারিকার দাবি, ১৯৮৬ সালে তৈরি বাড়িটি প্রোমোটিংয়ের জন্য প্রায়ই হুমকি দিয়ে ফোন করা হতো বৃদ্ধকে। প্রোমোটিংয়ের জন্য তাঁদের খুন করা হয়েছে, নাকি ডাকাতি করতে এসে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নরেন্দ্রপুরে দ্বিতীয় জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত দুজনকে প্রদীপ বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী আলপনা বিশ্বাস বলে শনাক্ত করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ২০ বছর ধরে নরেন্দ্রপুর থানার তিউড়িয়ায় একটি বাগানবাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ করতেন ওই দম্পতি। বাড়ির মালিক পেশাগত প্রয়োজনে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকেন। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হলে প্রদীপের ভাই জয়কে ফোন করে ওই দম্পতির খোঁজ নিতে বলেন তিনি।
গতকাল রাতে জয় গিয়ে দেখেন, সারা বাড়িতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ভাই-ভাবির সাড়া না পেয়ে বাথরুমে ঢুকে দুটি সুটকেসে টুকরো টুকরো করে কাটা দম্পতির লাশ খুঁজে পান তিনি।
জয় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশসহ রক্তমাখা সুটকেস দুটি উদ্ধার করে। দরজা ভাঙা বা জোর করে বাড়িতে ঢোকার কোনো নমুনা না থাকায় পুলিশ ধারণা করছে, পরিচিত কেউ তাঁদের হত্যা করেছে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।