লোকসভা ভোটের প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে এসে আরও একবার সারদা ও নারদকান্ড নিয়ে আঞ্চলিক শাসক দলকে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ বুধবার নদীয়া জেলার রানাঘাটে এক জনসভা থেকে আরও একবার মোদির মুখে সারদা, রোজভ্যালির কথা শোনা গেছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ক্ষমতায় ফিরলে সারদা ও নারদকান্ডের দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
গত কয়েক দিন ধরেই মোদি চিটফান্ড দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। গত মঙ্গলবার আসানসোলের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতির প্রমাণ নষ্টের অভিযোগও তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার রানাঘাটের সভায় মোদি বলেছেন, চিটফান্ডের নামে গরিব পরিবারগুলোকে প্রতারিত করা হয়েছে। গরিবদের পাই-পয়সার হিসাব নেওয়া হবে। চোখের পানির দাম দিতে হবে অপরাধীদের।
এদিনের প্রচারে মোদি চিটফান্ড নিয়েই সবচেয়ে সোচ্চার ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে নিশানা করে মোদি বলেন, ‘চিটফান্ডের চক্কর থেকে বাঁচতে কেন্দ্রে দুর্বল সরকার চাইছেন মমতা। কিন্তু ওনার আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন বাংলার মানুষ। বাংলার মানুষকে ভরসা দিচ্ছি, নেতা হোক বা অফিসার, সারদা-রোজভ্যালিকান্ডের দোষীদের ছাড়া হবে না।’
এদিন বীরভূমের ইলামবাজারের নির্বাচনী সভায় মোদি বলেছেন, ‘শিগগিরই দিদির সূর্য অস্ত যাবে। তাঁর পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে।’ অনুপ্রবেশের ইস্যুকেও এদিন মোদি প্রচারে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের বোমা তৈরিতে অবাধ ছাড় দিয়েছে তৃণমূল সরকার।
মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় ভোটের সময় একজনের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে মোদি বলেছেন, দিদি ভয় পেয়েছেন। তাই হিংসার আশ্রয় নিচ্ছেন। বাংলার উন্নয়নে কোটি কোটি রুপি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই অর্থ সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজে লাগেনি।
তৃণমূল কংগ্রেসের ‘গুন্ডাগিরি’র বিরুদ্ধেও এদিন সরব হন মোদি। তিনি বলেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমন বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে কাউকে মাথা নত করে থাকতে হয় না। কিন্তু বাংলায় তৃণমূলের গুন্ডাদের সামনে মাথা নত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তৃণমূলের গুন্ডা, মাফিয়ারা বাংলার সাধারণ মানুষের জীবন তছনছ করে দিয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে চিন্তা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাংলাদেশ থেকে লোক এনে মোদিকে তাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি।
নিজের বিদেশ সফরের সমালোচনার জবাব দিয়ে মোদি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ ভারতের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে। তাই বিদেশে কেউ অর্থ রাখলে খবর পেয়ে যাচ্ছে সরকার। এই ‘চা-ওয়ালা’র বিদেশ সফরের জেরেই তা সম্ভব হচ্ছে।
মোদি আরও বলেন, ‘সারা বিশ্ব আজ ভারতকে যে শ্রদ্ধা ও সম্মান দিচ্ছে, তা এই চা-ওয়ালার বিদেশ সফরেরই সুফল। ভারতের ঐতিহ্য ও কৃষ্টিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছি আমি।’