ভারতের তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। এ জন্য ৩০ লাখ রুপিতে বাংলাদেশি একজন পেশাদার খুনিকে দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি। ৫ লাখ রুপি ইতিমধ্যে পেশাদার খুনিদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অভিযোগ করেন, তাঁকে হত্যার করার জন্য পাঁচ লাখ রুপি পেশাদার খুনিকে অগ্রিমও দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে তাদের বাকি ২৫ লাখ রুপি দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে তিনি গোবরডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার ষড়যন্ত্রে কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতা কৈলাস বিজয়বর্গী, কলকাতার বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর, তাঁর বাবা সাবেক মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর এবং বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল মিলিয়ে চারজনের নাম অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ওই চারজনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
পেশাদার খুনিদের মধ্যে একজন পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সহকর্মীকে ফোন করেছেন।
এই ঘটনা সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে শাসকদলের শিবিরে ব্যাপক উত্তেজনাও তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, গত রোববার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙা থানায় খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ এবং ৮টা ৫০ মিনিটে তাঁর এক সহকর্মীর মোবাইলে বাংলাদেশ থেকে দুবার ফোন আসে। ফোন করে নিজেকে বাংলাদেশি বলে দাবি করে হত্যার পুরো বিষয়টি জানায়। তিনি জানিয়েছেন, দেবদাস মণ্ডল, শান্তনু ঠাকুর, মঞ্জুল ঠাকুর ও কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঠাকুরনগরে বসে খাদ্যমন্ত্রীকে খুনের ষড়যন্ত্র করছেন। যিনি ফোন করেছিলেন, তিন পেশাদার খুনিদের একজন। তিনি আরও জানিয়েছেন, পাঁচ লাখ রুপি অগ্রিম পেয়েই খাদ্যমন্ত্রীকে খুন করার জন্য পেশাদার খুনিদের একটি অংশ ইতিমধ্যেই বনগাঁয় ঢুকে পড়েছে।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘আমাকে ফোন করার কেউ সাহস পায়নি। আমার সহকর্মীর মোবাইলে আসা ফোনের পুরো কল রেকর্ড রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা ওই রেকর্ড পুলিশের হাতেও তুলে দেব। রাজনীতির ময়দানে না পেরে বিজেপি এখন খুনের চক্রান্তে নেমেছে। আমি পুলিশকে বলেছি, এই খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শান্তনু ঠাকুর, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর এবং দেবদাস মণ্ডলকে যেন অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের পেশাদার খুনিদের যেন খুঁজে বের করা হয়।’
এ ব্যাপারে শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ধরেননি।
বিজেপির বারাসত জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এসব করে খাদ্যমন্ত্রী নিজের জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন। আসলে এই লোকসভা নির্বাচনে পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। সেটা বুঝতে পেরে খাদ্যমন্ত্রী এখন উন্মাদ হয়ে গেছেন। এই খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তারই একটা বহিঃপ্রকাশ মাত্র। এই অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তথ্যসূত্র: জি নিউজ ও এপিবি আনন্দের ইউটিউব চ্যালেন।