ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল এলাকার ঝাড়গ্রাম জেলা শহর থেকে উদ্ধার মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর পরিচয় মিলেছে। তাঁর নাম রাজিয়া বেগম (৩৫)। বাড়ি বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার বড়বাড়ি এলাকার দক্ষিণ লোহালিয়ায়। বাবার নাম লতিফ হাওলাদার। আগামীকাল সোমবার তাঁর বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
বছরখানেক আগে রাস্তায় পড়ে থাকা রাজিয়া বেগমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে ঝাড়গামের পৌর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তাঁকে ঝাড়গ্রামের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
তখন রাজিয়া বেগমকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে পশ্চিমবঙ্গের হ্যাম রেডিও। হ্যাম রেডিওর ঝাড়গ্রামের দুই সদস্য শিক্ষক নির্মলেন্দু মাহাত এবং সুজাতা চট্টোপাধ্যায় হাসপাতালে রাজিয়ার পাশে থেকে তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা চালান। চেষ্টা করেন তাঁর নাম–ঠিকানা জানার।
একপর্যায়ে এগিয়ে আসেন হ্যাম রেডিও পশ্চিমবঙ্গ রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বিশ্বাস। তিনি এবং তাঁর সংগঠনের সদস্যরা রাজিয়া বেগমের পরিচয় বের করার চেষ্টা করেন। তাঁরা যোগাযোগ করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনসহ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
এখানকার হ্যাম রেডিও যোগাযোগ করে বাংলাদেশের হ্যাম রেডিওর সদস্য আদনানের সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকেও রাজিয়ার ছবি দিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়। অবশেষে হ্যাম রেডিও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় তাঁর ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও পশ্চিমবঙ্গের কাছে রাজিয়া বেগমের নাম–ঠিকানা সঠিক বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এরপর রাজিয়ার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর চাচাতো ভাই মো. তরিকুল ইসলাম রাজিয়াকে দেশে ফিরিয়ে নিতে কলকাতায় আসেন। দেখা করেন রাজিয়া বেগমের সঙ্গে। চাচাতো ভাই তরিকুলকে দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন রাজিয়া। বলেন, নতুন জামাকাপড় পরে দেশে ফিরে যাবেন।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন রাজিয়া। আরও কিছুদিন চিকিৎসা দিলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।